অবশেষে হদিস মিলল মৃত উপভোক্তার নামে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে বরাদ্দ হওয়া টাকার। ঘাটাল ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান গুরুপদ ঘোষ বলেন, “আমরা ওই ঘটনার খবর পেয়েই পঞ্চায়েতের মাধ্যমে তদন্ত করি। যে অ্যাকাউন্ট নম্বরে ইন্দিরা আবাসের টাকা জমা পড়েছিল, সেই নম্বরের সূত্র ধরে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে বীরসিংহ পঞ্চায়েতের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা গৌতম পাল নাম এক যুবকের নাম জানা যায়। পরে তাঁর কাছ থেকেই ওই টাকা উদ্ধার হয়। সরকারি নিয়মানুযায়ী ওই অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।” উল্লেখ্য, মৃত উপভোক্তার নামে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা বরাদ্দ করার অভিযোগে সরব হন অর্চনা চৌংরে নামে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের এক সিপিএম সদস্যা। অভিযোগ ওঠে, বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যমসুন্দরপুরের বাসিন্দা তিলকা পাল বছর আটেক আগে মারা গিয়েছেন। অথচ তাঁর নামেই ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির ১৮ হাজার ৭৫০ টাকা বিলি করা হয়েছে। প্রয়াত তিলকাদেবীর এক ছেলে ও তিন মেয়ে। তাঁর ছেলে মারা গিয়েছেন। দুই মেয়ে বিবাহিত। তবে অবিবাহিত রয়েছেন তাঁর ছোট মেয়ে ভারতী পাল। তবে ভারতীদেবী দাবি করেন, তিনি কোনও টাকা পাননি। তাঁদের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও নেই। গুরুপদবাবুর দাবি, কী ভাবে প্রয়াত তিলকাদেবীর নামে বরাদ্দ হওয়া টাকা ওই গ্রামেরই এক যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিলি করা হল- সেবিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। দলীয় ভাবেও এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়মানুযায়ী, ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েত অফিস থেকে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি হয়। সেই সময়ই তাঁদের পাশবইয়ের নকল কপি বিডিও অফিসে পাঠানো হয়। তাতেই প্রমাণ থাকে কার নামে ওই টাকা বরাদ্দ হচ্ছে এবং তাঁর ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বরই বা কত। বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জয়ন্তী বিশুই বলেন, “আমরাই ইন্দিরা আবাসের উপভোক্তাদের তালিকা পাঠিয়েছিলাম। তবে কীভাবে ভুল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গেল, সেবিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনা আমাদের কোনও কর্মীদের ভুলে না-কী ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ঘাটাল ব্লকের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিত বলেন, “আমি ছুটিতে রয়েছি। গত শনিবারই টাকার সন্ধান ও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গ্রাহকের নাম জানার জন্য তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কোনও গাফিলতি প্রমাণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও মঙ্গলবার অর্চনাদেবী অভিযোগ করেন, “পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সবই জানতেন। ওই টাকা অত্মসাত করার জন্য দলেরই এক কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর তিলকাদেবীর তালিকায় দেওয়া হয়েছিল। কেননা, তিলকাদেবী যে মারা গিয়েছেন তা স্থানীয়রা সকলেই জানেন। তাই তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy