Advertisement
০৭ মে ২০২৪

হলদিয়ায় কারখানার ট্রান্সফর্মারে আগুন

কার্বোনেটেড ইস্পাতের কাঁচামাল উত্‌পাদনকারী শিল্প সংস্থা মডার্ন ইন্ডিয়া কন-কাস্ট লিমিটেডের কারখানায় বৃহস্পতিবার আগুন লাগে। এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ হলদিয়ার ভুঁইয়ারায়চকে অবস্থিত ওই সংস্থার একটি ফার্নেসে আগুন লাগে।

ঘটনাস্থলে দমকলবাহিনী। নিজস্ব চিত্র।

ঘটনাস্থলে দমকলবাহিনী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০০:১৫
Share: Save:

কার্বোনেটেড ইস্পাতের কাঁচামাল উত্‌পাদনকারী শিল্প সংস্থা মডার্ন ইন্ডিয়া কন-কাস্ট লিমিটেডের কারখানায় বৃহস্পতিবার আগুন লাগে। এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ হলদিয়ার ভুঁইয়ারায়চকে অবস্থিত ওই সংস্থার একটি ফার্নেসে আগুন লাগে। সরকারি ও অন্য চারটি স্থানীয় শিল্প সংস্থা থেকে আসা দমকলের মোট পাঁচটি ইঞ্জিন চার ঘন্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্বে আনে। দমকল ও ওই সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, কারখানার এক নম্বর ফার্নেস সংলগ্ন দোতলার হাইড্রোলিক রুমে থাকা একটি ট্রান্সফর্মারে হঠাত্‌ আগুন লাগার পর সেটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। ট্রান্সফর্মারের দাহ্য তেল ছিটিয়ে ফার্নেস-সহ উপরের দু’টো তলার দু’টি ট্রান্সফর্মারে আগুন লেগে যায়। এর জেরে কারখানায় উত্‌পাদন বন্ধ রাখা হয়। উল্লেখ্য, ওই কারখানায় কার্বোনেটেড ইস্পাত শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল ফেরো অ্যালয়, ফেরো ম্যাঙ্গানীজ, সিলিকো ম্যাঙ্গানীজ উপাদন হয়। সংস্থার মোট ছ’টি ফার্নেস থাকলেও পাঁচটিতে উত্‌পাদন কাজ চালানো হয়। আগুন লাগা ফার্নেসটি নানা ত্রুটির কারণে গত এক বছর ধরে বন্ধ ছিল। সপ্তাহখানেক আগে চার নম্বর ফার্নেসটি বন্ধ রেখে এই ফার্নেসটি চালু রাখা হয়। যদিও ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

ওই ফার্নেসের ‘পেস্ট ফিল্ডে’ কর্মরত শ্রমিক শেখ রিয়াজউদ্দিন মল্লিক বলেন, “আমরা বারো জন কাজ করার সময় সকাল ৭টা নাগাদ হঠাত্‌ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। তারপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধোঁয়া আর আগুনের হলকায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পরেই কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা বাইরে বেরিয়ে আসি।” কারখানার অপর এক কর্মী রণজিত্‌ সামন্ত বলেন, “আতঙ্কিত হয়ে আমরা বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি কারখানার ওপরের আকাশ কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ভরে উঠেছে। ঘটনার প্রায় তিরিশ মিনিট পরে একটি শিল্প সংস্থার দমকল এসে পৌঁছনোর পরে দমকল কর্মীদের সঙ্গে আমরাও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগাই।” ওই দমকল সংস্থার এক কর্মী শেখ আমিরুল ইসলাম বলেন, “প্রথমে আমরা জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে তাতে কাজ না হওয়ায় ফোম স্প্রে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়।” হলদিয়া দমকল স্টেশনের আধিকারিক সৌগতসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ট্রান্সফর্মারের তেল ট্যাঙ্কের ভালভ ঢিলে থাকায় সেখান থেকে চঁুইয়ে আসা তেলে আগুন লেগেই এই ঘটনা ঘটে। আমরা ফোম স্প্রে করার পরই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরই কারখানায় ছুটে আসেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র নেতারা। সংগঠনের হলদিয়া জোনের সভাপতি মিলন মণ্ডল বলেন, “দমকল ও শ্রমিকদের তত্‌পরতায় আরও বড় ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। সংস্থা কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন এই ক্ষয়ক্ষতি সত্বেও তার প্রভাব শ্রমিকদের উপর পড়বে না।” সংস্থার সিনিয়ার ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) বিবেক সিঙ্ঘানিয়া বলেন, “সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সংস্থার অনেক বড় ক্ষতি আটকানো গিয়েছে। এই ধরণের অগ্নিকাণ্ডে এত দ্রুত সাফল্য সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী প্রায় তিন কোটি টাকার যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়েছে। এ দিন বিকালে অন্য ফার্নেসগুলি চালু করার চেষ্টা করা হবে।” তিনি জানান, নতুন ট্রান্সফর্মার ও অন্য যন্ত্রাংশ এনে ওই ফার্নেসটি ফের চালু করতে অন্তত ছ’মাস সময় লাগবে। শ্রমিকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “যারা আগুন নিভিয়ে সংস্থার পাশে দাঁড়ালো তাদের পাশে থাকবে সংস্থা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

haldia factory fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE