Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বিহার থেকে লুকিয়ে বালির পথে জালে রমেশ

কয়েকশো প্রোমোটার এবং শাসক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ করে, ড্রোন উড়িয়ে মাস কয়েক আগে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়ে থিতু হতে চেয়েছিল সে। কিন্তু পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। শেষ পর্যন্ত বিহার থেকে লুকিয়ে গাড়িতে বালির দিকে যাওয়ার পথে পুলিশের জালে ধরা পড়ল হুগলির ‘জমি-মাফিয়া’ রমেশ মাহাতো।

ধরা পড়ার পরে রমেশ মাহাতো। ছবি: তাপস ঘোষ

ধরা পড়ার পরে রমেশ মাহাতো। ছবি: তাপস ঘোষ

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ০৪:০১
Share: Save:

কয়েকশো প্রোমোটার এবং শাসক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ করে, ড্রোন উড়িয়ে মাস কয়েক আগে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়ে থিতু হতে চেয়েছিল সে। কিন্তু পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। শেষ পর্যন্ত বিহার থেকে লুকিয়ে গাড়িতে বালির দিকে যাওয়ার পথে পুলিশের জালে ধরা পড়ল হুগলির ‘জমি-মাফিয়া’ রমেশ মাহাতো।

রবিবার গভীর রাতে সিঙ্গুরের বড়া এলাকার কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে রমেশের গাড়ি আটকান সেখানকার ওসি সুখময় চক্রবর্তী এবং ডানকুনি থানার ওসি প্রদীপ দাঁ। খুন, তোলাবাজি-সহ অন্তত ৪২টি মামলায় অভিযুক্ত রমেশের গাড়ি থেকে ৬২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। ওই গাড়ি থেকে রমেশের দুই শাগরেদ রানাপ্রতাপ এবং শিউনারায়ণকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

২০১১ সালে হুগলির ‘ত্রাস’ হুব্বা শ্যামল ওরফে শ্যামল দাস খুন হয়। সেই খুনে মূল অভিযুক্ত হিসেবে রমেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বছর দুয়েক হাজতবাসের পরে সে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পায়। তার পরে ফের ধরা হল তাকে। পুলিশ জানায়, কোন্নগরের ধর্মডাঙায় ঝাঁ-চকচকে অফিস খুলে শাগরেদদের দিয়ে সে জমি-দখলের কারবার চালাচ্ছিল। হাওড়ার বালি-বেলুড় থেকে শুরু করে হুগলির দিল্লি রোড, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা এবং উত্তরপাড়া, কোন্নগর, রিষড়া,শ্রীরামপুর, চন্দননগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল তার কারবার। রমেশের হুমকিতে জেলার প্রোমোটাররা তটস্থ থাকতেন। প্রতিদিন কাজের জন্য নির্দিষ্ট টাকা দিতে হতো তাঁদের। উত্তরপাড়ার এক প্রোমোটার রমেশ-আতঙ্কে মাস কয়েক আগে এলাকাছাড়াও হন। কিছুদিন আগে এক কিশোরকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে রমেশের দলবলের বিরুদ্ধে। মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পরে কোনও অপরাধ না করার শর্তে পুলিশের কাছে এলাকায় থাকতে দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছিল রমেশ। কিন্তু পুলিশ আমল দেয়নি।

রমেশ-সহ ধৃত তিন জনকে সোমবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। ধৃতদের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে রমেশকে সংবাদমাধ্যমের থেকে আড়ালের চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিন্তু রমেশ নিজেই সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বলে, ‘‘গার্ড করতা হ্যায় কিউ? ও লোগ কা সাথ মেরা জান-পহেচান হ্যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE