দেশের সব স্কুলে শৌচাগার গড়ে তোলার ডাক দিয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। আর সেই প্রকল্পে আশাতীত ভাবে সাফল্য পেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। কাজের স্বীকৃতিও এল প্রকাশ্যে, একেবারে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’টি টুইট করে জানান, স্বচ্ছ বিদ্যালয় পরিকল্পনার আওতায় রাজ্যের ২৯,৯৫৫টি স্কুলে ৪২,০৫৪টি শৌচাগার তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল, তার থেকেও বেশি শৌচালয় নির্মাণ করেছে রাজ্য সরকার। মমতার দাবি, রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। গতকাল মমতার করা দু’টি টুইট আজ প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে রি-টুইট করা হয়। পরে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রেও জানানো হয়েছে, বেশ কিছু রাজ্য কেন্দ্রের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে সক্ষম হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ও জানায়, নরেন্দ্র মোদীর লক্ষ্য ছিল দেশের সব স্কুলে অন্তত একটি করে শৌচালয় নির্মাণ করা। উঁচু ক্লাসের ছাত্রীদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা কমাতেই এই পরিকল্পনা হাতে নেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কাজে পশ্চিমবঙ্গ আশাতীত সাফল্য পেয়েছে।
কেন্দ্র ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—দু’পক্ষের সুসম্পর্কের আবহ তৈরি হয়েছিল গত কয়েক মাস ধরেই। বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন মমতা। দিল্লিতে এসে রাজ্যের দাবি-দাওয়া নিয়ে মমতা বৈঠকও করেন মোদীর সঙ্গে। যে দাবি সহানুভূতির সঙ্গে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। এ বার সেই সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল কেন্দ্র। রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, স্কুলে শৌচালয় নির্মাণে পশ্চিমবঙ্গ যে সাফল্য পেয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, আজ সরকারি ভাবে সেই দাবিকেই স্বীকৃতি দিল মোদী-সরকার।
শুধু কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি হিসেবেই নয়, সময়ের দিক থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা টুইটটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। এক সময়ে ধর্মঘট ও বন্ধের জন্য নেতিবাচক রাজনীতি করেন বলে দুর্নাম হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর এখন, দেশব্যাপী ধর্মঘটের আগের দিন, ওই ঘোষণা করে মমতা বুঝিয়ে দিলেন বন্ধ বা ধর্মঘটের চেয়ে স্কুলের বাচ্চাদের শৌচালয় তৈরি করাটা তাঁর সরকারের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অন্য দিকে, রাজ্য বিজেপি মমতা-বিরোধিতার পথে হাঁটলেও, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলার পক্ষপাতী। সাম্প্রতিক অতীতে যা মোদী-মমতা বৈঠক ছাড়াও সংসদের কক্ষ সমন্বয়ের মধ্যেও ফুটে উঠেছে। কোনও পক্ষই এখন একে অপরকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছে না। তা ছাড়া, বিজেপি নেতৃত্বের আশু পরীক্ষা হল বিহার নির্বাচন। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘দলের এখন লক্ষ্য বিহারে ক্ষমতা দখল করা। সেই ফলের ভিত্তিতে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনগুলোর রণকৌশল ঠিক হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy