কেরলে ঢুকেছিল সে ‘বিফোর টাইম’ অর্থাৎ সময়ের কিছু আগে। কিন্তু চার দিনেও বর্ষা দক্ষিণ ভারতের সীমা পেরোতে পারল না। কবে সে ফের গা-ঝাড়া দিয়ে উঠে পূর্ব ভারতের দিকে রওনা দেবে, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না। ফলে আগাম রওনা দেওয়া বর্ষা এক্সপ্রেস কতটা দেরিতে ‘দিদি’র খাসতালুকে এসে পৌঁছবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন আবহবিদেরা।
হাওয়া অফিস বলছে, আপাতত দক্ষিণবঙ্গকে তাই খুচরো বৃষ্টির আশাতেই থাকতে হবে। দিনের বেলা সইতে হবে ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি। শুক্রবার তেমনটাই কেটেছে। আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, এ দিন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কোঠা ছুঁতে পারেনি। তবু বাড়তি আর্দ্রতার জন্য সকাল থেকেই ঘামতে ঘামতে দিন শুরু হয়েছে। বিকেলের পরে বীরভূম, বর্ধমান, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার একাংশে ঝড়বৃষ্টি হয়। কিন্তু সেই স্বস্তি নেহাতই সাময়িক।
বর্ষার এমন দশা কেন? এই তো সে সাততাড়াতাড়ি কেরলে ঢুকল! সেই গতি হঠাৎ হারিয়ে গেল কেন?
কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বর্ষা পাটিগণিত মেনে চলে না। কেরলে তাড়াতা়ড়ি ঢুকেছে বলেই সব জায়গায় আগেভাগে ঢুকবে, এমন হয় না।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, কেরল থেকে বর্ষার পূর্ব ও উত্তর ভারতের দিকে এগিয়ে আসার পিছনে বায়ুচাপ, বায়ুপ্রবাহের কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতির প্রয়োজন হয়। সেগুলির উপরে নির্ভর করেই ধাপে ধাপে এগোতে থাকে বর্ষা। ‘‘এটা অনেকটা কলকাতায় দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ঢোকার মতো। এক ধাপ এগোনোর পরে এক বার দড়ি দিয়ে আটকানো হয়। আবার কিছু দিন পরে এক ধাপ এগোয়,’’ বলেন সঞ্জীববাবু।
সেই ধাক্কা কবে আসবে, সেটা এখনও স্পষ্ট হয়নি আবহবিজ্ঞানীদের কাছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র টানে উত্তর-পূর্বে বর্ষা ঢুকে পড়েছে। তা অসমে ছড়াচ্ছে। তার ফলে উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢোকার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অসমে পুরোপুরি বর্ষা ছড়িয়ে পড়লেই উত্তরবঙ্গের দোরগোড়ায় বর্ষা পৌঁছে যেতে পারে। মৌসম ভবনের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, বর্ষার আরও দিন দুয়েক কেরলে থমকে থাকবে। তার পরে কর্নাটকের একাংশে ঢুকতে পারে সে। ৭ জুন নাগাদ বর্ষা কিছুটা গা-ঝাড়া দিতে পারে। তার পরেই পূর্ব ভারতের দিতে এগোতে পারে সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy