বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতায় এক পশলা বৃষ্টি। ছবি: পিটিআই।
নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক দিন আগেই মৌসুমি বায়ু এ বার কেরলে পৌঁছে গিয়েছে। বর্ষা এক্সপ্রেস তড়িঘড়ি ঢুকেছে মহারাষ্ট্রেও। কিন্তু কলকাতার পথেই তার কিছুটা দেরি হচ্ছে।
এ বার কেরল উপকূলে বর্ষা ঢুকেছে নির্দিষ্ট সময়ের তিন দিন আগে। ১ জুনের জায়গায় ২৯ মে। পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে কেরল থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে মৌসুমি বায়ু পৌঁছে যায় সাত দিনে। সেই হিসেবে ৫ জুন তার পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। সাত দিনের জায়গায় ন’দিন কেটে গিয়েছে। এখনও বঙ্গোপাগরে বর্ষার অনুকূল বায়ুপ্রবাহের দেখা নেই।
উপগ্রহ চিত্র বলছে, বর্ষা সবে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানায় ঢুকেছে। ওড়িশা হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে তার আরও কয়েকটা দিন লাগতে পারে বলে জানাচ্ছেন মৌসম ভবনের আবহবিজ্ঞানীরা। তবে আবহবিজ্ঞানীদের কেউ কেউ বলছেন, অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হচ্ছে, যা রবিবার নাগাদ বর্ষাকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকিয়ে দিতে পারে। সব কিছুই নির্ভর করছে ওই বায়ুপ্রবাহের ভবিষ্যতের উপরে। তার শক্তি দ্রুত বাড়লে শনিবার থেকেই শুরু হতে পারে বৃষ্টি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা এবং আশেপাশে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ভেবেছিলেন, বর্ষা বুঝি এসে গেল। কিন্তু আবহবিদেরা জানান, স্থানীয় ভাবে মেঘ তৈরি হয়েই এই বর্ষণ। এর সঙ্গে বর্ষার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে ঘনায়মান নিম্নচাপটি বেশি করে জলীয় বাষ্প ঢোকালে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছতে কেন দেরি করছে বর্ষা? আবহবিদদের অনেকেই বলছেন, মে মাসের শেষ সপ্তাহেই আরব সাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে ওই উপকূলে ঘনঘন নিম্নচাপ তৈরি হয়ে চলেছে। তার ধাক্কায় কেরলে বর্ষা আগে ঢুকেছে, পশ্চিম ভারত উপকূল দিয়ে দ্রুত এগোচ্ছে সে। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘পরিস্থিতি এতটাই অনুকূল যে, চলতি সপ্তাহের শেষে গুজরাতে পৌঁছে যেতে পারে বর্ষা।’’
আবহবিদদের একাংশের ব্যাখ্যা, আরব সাগরে ঘনঘন তৈরি হওয়া নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগর উপকূলের জলীয় বাষ্প টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তাই মুম্বইয়ের উপরে ঘন মেঘের ঘনঘটা, কিন্তু কলকাতার আকাশে বাদল মেঘের দেখা নেই। বঙ্গোপসাগর উপকূলে নিম্নচাপের শক্তি বাড়লে তা জলীয় বাষ্পকে পশ্চিম উপকূল থেকে পূর্ব উপকূলের দিকে টেনে আনবে বলে আশা করছেন আবহবিদেরা।
এ বার দক্ষিণবঙ্গে তেমন গরম পড়েনি। রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে এক দিনের জন্যও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আবহবিদেরা জানান, এমন ‘শীতল গ্রীষ্ম’ দীর্ঘদিন দেখা যায়নি। বীরভূম, বর্ধমানের শুখা এলাকায় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে এ বার যা বৃষ্টি হয়েছে, ২০ বছরে তা হয়নি। ‘শীতল গ্রীষ্ম’ পশ্চিমবঙ্গ, বিশেষত দক্ষিণবঙ্গে স্বাভাবিক বর্ষার পথে অন্তরায় হয়ে ওঠে কি না, সে-দিকে নজর রাখছেন আবহবিদদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy