প্রতিবাদ: মিছিলে শহরের বস্ত্র-ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
‘বন্দুকের নলে’র মুখে রাজ্যকে জিএসটি মেনে নিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নিয়ে নতুন কর ব্যবস্থা চালুর দিনও সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু তা বলে প্রশাসনিক প্রস্তুতির দিক থেকে পিছিয়ে নেই অমিত মিত্রের অর্থ দফতর। জিএসটি আদায়ের পরিকাঠামো ইতিমধ্যেই পুরোদস্তুর তৈরি হয়ে গিয়েছে। আজ, শনিবার থেকেই রাজ্যে জিএসটি আদায় সম্ভব বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রস্তুতি ঠিক কী রকম?
অর্থ দফতর জানাচ্ছে, এ রাজ্যে আড়াই লক্ষ ভ্যাট ডিলার রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯৭% জিএসটি নেটওয়ার্কে চলে এসেছেন। বাকিরাও আর দু’চার দিনের মধ্যে চলে আসবেন বলে মনে করছেন কর্তারা। অনেকের প্রশ্ন রয়েছে, ৩০ জুন পর্যন্ত যে ভ্যাট আদায় হয়েছে তা কীভাবে জমা হবে? কারণ, ১ জুলাই থেকেই তো জিএসটি চালু হয়ে যাচ্ছে।
অর্থ কর্তারা জানাচ্ছেন, চিন্তার কিছু নেই, ২১ জুলাই পর্যন্ত বকেয়া ভ্যাট জমা দেওয়া যাবে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা এই সময়ের মধ্যে জিএসটি নেটওয়ার্কে নথিভূক্ত হয়ে কারবার চালানোর সুযোগ পাবেন। তাঁদের প্রথম রিটার্ন জমা দিতে হবে ১০ অগষ্ট। অর্থ দফতর সেই রিটার্ন খতিয়ে দেখা শুরু করবে ২১ অগষ্টের পর। যার অর্থ, ১ জুলাই থেকে চালু হলেও প্রথম মাসের রিটার্ন দেওয়ার জন্য দেড় মাসের বেশি সময় পাবেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া প্রথম মাসের হিসাব দাখিলের ফর্মও খুবই সরল করে দেওয়া হয়েছে। যা অনেকটা ভ্যাটের মতোই। ফলে শুরুতেই ব্যবসায়ীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে বলে কর্তারা জানিয়েছেন।
তা হলে কি জিএসটি চালু হলে কোনও সমস্যা হবে না?
বাণিজ্যিক কর বিভাগের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিপুল এই কর ব্যবস্থার পরিবর্তনে কোনও সমস্যা হবে না, এ কথা হলফ করে বলা যায় না। অন্তত সড়গড় হতে তিন মাস সময় তো লাগবেই। তিনটি ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রথম কারণ হল, জিএসটি নেটওয়ার্কে উপযুক্ত ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া। প্রত্যন্ত এলাকায় এ নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোন সামগ্রীর কী হারে কর চাপবে তা সফ়টওয়্যারে এন্ট্রি করার সময় কিছু সমস্যা হতে পারে এবং ইনভয়েস তৈরি নিয়েও জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে কর-কর্তারা জানাচ্ছেন। তবে তা প্রথম রিটার্নের সময়ে। তার পরে আর সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে কর্তাদের মত।
রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকলেও জিএসটি চালু হওয়ায় খুশি প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মধ্যরাতের অনুষ্ঠান বয়কট করলেও আমলাদের দিল্লি যেতে বাধা দেননি। তাঁদের আশা, রাজ্যে উৎপাদন শিল্পের চেয়ে পরিষেবামূলক কারবার বেশি। মূলত গ্রাহক নির্ভর এই রাজ্যে তাই জিএসটি আদায়ের বহর বাড়বে। তারপরেও পাঁচ বছরের জন্য জিএসটি ক্ষতিপূরণের প্রাপ্য টাকা তো আছেই। তাই বিরোধিতা করলেও আখেরে জিএসটি থেকে লাভই দেখছে নবান্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy