Advertisement
০১ মে ২০২৪

নারী পাচারে নাম জড়াল তৃণমূল নেতার

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ওই বাড়িটিতে এই ধরণের কার্যকলাপ চলছে। সম্প্রতি পুলিশের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ হয়। শুক্রবার কল্যাণীর এসডিপিও উত্তম ঘোষের নেতৃত্বে ওই বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০৯:১০
Share: Save:

অভিজাত এলাকা বলেই পরিচিত। কল্যাণী রেলস্টেশন লাগোয়া সেই এলাকারই একটি পেল্লাই বাড়িতে শুক্রবার দুপুরে আচমকাই বিরাট পুলিশ বাহিনী ঢুকতে দেখে বিন্দুমাত্র অবাক হননি এলাকার বাসিন্দারা। কিছুক্ষণের তল্লাশীর পরে সেই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ১৬ জন মহিলাকে। গ্রেফতার করা হয় দুই যুবককে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতে মহিলাদের আটকে রেখে চলছিল অসামাজিক কারবার। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে গয়েশপুরের এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার। সৌমেন সিংহ রায় নামের ওই নেতা বিতর্কিত বাড়িটিতেই ভাড়া থাকেন বলে স্থানীয়রা জানেন। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, সৌমেন ওই বাড়িটি দখল করে রেখেছে। সেই বাড়িটি চড়া দামে ভাড়া খাটাত সে। পুলিশ জানিয়েছে, সৌমেন পলাতক।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ওই বাড়িটিতে এই ধরণের কার্যকলাপ চলছে। সম্প্রতি পুলিশের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ হয়। শুক্রবার কল্যাণীর এসডিপিও উত্তম ঘোষের নেতৃত্বে ওই বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ বাহিনী। উদ্ধার করা হয় ওই মহিলাদের। গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।

স্থানীয়রা কেউ অভিযোগ করেননি বলে হরিণঘাটা থানার আইসি কুন্তল মণ্ডল অভিযোগ দায়ের করেন। সৌমেন এবং শিবা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে এই কারবারে সৌমেনের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে। ধৃত দুই যুবক এবং উদ্ধার করা মহিলাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তার নাম জানা গিয়েছে। সৌমেনের যোগ প্রমাণিত হতেই তার নামে এফআইআর হয়।

বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয় শাসক দলের তৎপরতা। পুলিশ কর্তাদের ফোনে বিষয়টি ‘ম্যানেজ’ করার জন্য গয়েশপুরের এক প্রভাবশালী নেতা পুলিশ কর্তাদের বারবার ফোন করতে থাকেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ম্যানেজ করা যায়নি। কল্যাণী থানার আইসি ছুটিতে রয়েছেন বলে চাকদহ থানার আইসি পিন্টু সাহাকে এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। নদিয়ার পুলিশ সুপার শিষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। মহিলাদের কয়েকজন স্থানীয়।’’ এ দিন কল্যাণী আদালত থেকে ধৃতরা জামিন পায়। মহিলাদের হোমে পাঠানো হয়েছে।

গয়েশপুরের পুরপ্রধান তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি মরণ দে বলেন, ‘‘আমি তো জানতামই না সৌমেন ওই বাড়িতে থাকে। পরে সে আমাকে জানায় সে ওি বাড়ির দোতলায় ভাড়া থাকে। ওই কারবারের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওঅ বাড়িটি একসময় এক চিটফান্ড কর্তার ছিল। মরণবাবু বলেন, ‘‘তবে যদি তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হয়, তা হলে আইন আইনের পথেই চলবে। সে ক্ষেত্রে দল ব্যবস্থা নেবে।’’ মরণবাবু জানান, সৌমেন পলাতক নয়। সে পুলিশের সঙ্গে তদন্তে সহযোগীতা করছে। তবে সৌমেনের মোবাইল ঘটনার পর থেকেই বন্ধ। ফলে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE