Advertisement
০৬ মে ২০২৪
লোকসান ৩১৬ কোটির

জেলা জুড়ে বিদ্যুৎ-চুরি বন্ধে বৈঠক

পরিষেবায় কোনও ঘাটতি নেই। কিন্তু রাজ্যের যে পাঁচ জেলায় বিদ্যুতের লোকসানের পরিমাণ সব থেকে বেশি, সেই তালিকায় অন্যতম মুর্শিদাবাদ। বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের হিসেব বলছে, এ জেলায় গত আর্থিক বছরে ক্ষতির পরিণাম ছিল ৩১৬ কোটি টাকা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০১:০০
Share: Save:

পরিষেবায় কোনও ঘাটতি নেই। কিন্তু রাজ্যের যে পাঁচ জেলায় বিদ্যুতের লোকসানের পরিমাণ সব থেকে বেশি, সেই তালিকায় অন্যতম মুর্শিদাবাদ। বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের হিসেব বলছে, এ জেলায় গত আর্থিক বছরে ক্ষতির পরিণাম ছিল ৩১৬ কোটি টাকা। সারা রাজ্যে যেখানে ক্ষতির হার ২৮ শতাংশ, সেখানে মুর্শিদাবাদে ক্ষতির হার ৫৪.৩৩ শতাংশ। সেই ক্ষতি কমাতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলেন বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার কর্তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে বহরমপুরে জেলাশাসকের অফিসের জেলা পরিষদের সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস, জেলাশাসক পি উলাগানাথন, পুলিশ সুপার মুকেশকুমার, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করেন বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার চেয়ারম্যান রাজেশ পান্ডে। ছিলেন সংস্থার অন্য কর্তারাও। বৈঠক শেষে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর, জেলাশাসক এবিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস বলেন, “বিদ্যুৎ চুরি, বিদ্যুতের বিল জমা না দেওয়া-সহ নানা কারণে এই জেলায় প্রায় ৫৫ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে। সেই ক্ষতির থেকে লাভের মুখ দেখাতেই এই বৈঠক।’’ আলোচনায় ছিল লো-ভোল্টেজ সংস্কার্নত বিষয়টিও। কি ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সভাধিপতি জানাচ্ছেন, হুকিং, মিটারে কারচুপিসহ বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযান চালানো হবে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল যাতে মেটায় সে বিষয়ে অভিযান চালানো হবে। বিদ্যুৎ দফতরকে পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা করবে। এ ছাড়া মাসে একবার করে ব্লক প্রশাসন বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন।

কিভাবে এত ক্ষতি? বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে হুকিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও এখনও বহু এলাকায় হুকিং হচ্ছে নির্বিচারে। এ ছাড়াও মিটারেও নানা ভাবে কারচুপি করা হচ্ছে। বকেয়া বিল নিয়েও সমস্যার শেষ নেই। বিদ্যুৎ বন্টন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় শতাংশের হিসেবে নবগ্রামে এলাকায় লোকসান সব থেকে বেশি। এখানে ৭৮.৪২ শতাংশ লোকসান হয়েছে। এখানে গত এক বছরে ১০২.০৫ মিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে। কিন্তু দাম এসেছে মাত্র ২২.০৩ মিলিয়ন ইউনিটের। অর্থাৎ ক্ষতির পরিয়াণ ৮০.০৩ মিলিয়ন ইউনিট। ওই এলাকায় আর্থিক হয়েছে ২৭.৫২ কোটি টাকা। পাঁচথুপি এলাকাতেও ক্ষতির পরিমাণ ৮০.৭৮ মিলিয়ন ইউনিট। টাকার হিসেবে প্রায় ২৭ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে জেলার ৩৪ টি এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ ৩১৬ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, প্রায় এক লক্ষ গ্রাহক সঠিক সময় বিল না মেটানোয় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ রয়েছে। ওই এক লক্ষ গ্রাহকের বকেয়া বিলের পরিমাণ ৫৬ কোটি ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার। ক্ষতির বিরুদ্ধে এত দিন কি করেছে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি? গত এক বছরে মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৬৪২টি বিদ্যুৎ চুরি চিহ্নিত হয়েছে, থানায় এফ আই আর হয়েছে ১৪৭৫টি, গ্রেফতার হয়েছে ১৪৯ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electricity Hooking Administrative
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE