বারো বছর আগে জেলা পরিষদ ঘোষণা করেছিল, বাবলা নদীর উপর লোহাদহে ঘাটে সেতু তৈরি হবে। কিন্তু সেই ঘোষণার পরেও কিছুই হয়নি।
বাবলা নদীর একপ্রান্তে শক্তিপুরের বাজারসৌ এলাকা। আর অপরপ্রান্তে ভরতপুরের লোহাদহ ঘাট। শক্তিপুর কেএমসি ইনস্টিটিউশন, বাজারসৌ হাইস্কুল, শক্তিপুর কেএমসি ইনস্টিটিউশন গালর্স স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষকেরা ওই ঘাট পাড় হয়েই স্কুলে যান। বছর বারো আগে শক্তিপুর ও ভরতপুরকে জুড়তে লোহাদহ ঘাটের উপর সেতু তৈরির ঘোষণা করেছিল জেলা পরিষদ। কিন্তু প্রশাসনিক লাল ফিতের ফাঁসে সেই সেতু তৈরির কাজ আজও শুরু হল না। তাই শক্তিপুরের বাজরসৌ ও ভরতপুরের লোহাদহের মানুষ আজও প্রাণ হাতে নিয়ে নদী পারাপার করেন। নদিয়ার পলাশি ও দেবগ্রামের লোকজন রামনগর ঘাট পাড় হয়ে মুর্শিদাবাদে ঢোকেন। তারপর লোহাদহের সেতু পার হয়ে কান্দি মহকুমায় যান তাঁরা। এতে যেমন জাতীয় সড়কের ঝক্কি কমে, তেমন দূরত্বও কমে। শক্তিপুর কেএমসি ইস্টিটিউশনের ইংরেজির শিক্ষক প্রদীপ নারায়ণ রায় বলেন, ‘‘২০০৪ সালে এলাকার মানুষের দাবি মেনে প্রশাসন লোহাদহ সেতু তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল। ৯ কোটি ও ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ও ধরা হয়। কিন্তু এক যুগ পার হলেও কোন কাজই হল না।’’ লোহাদহ, ঘোষকুড়া, খয়রা, একডালা, জোড়গাছি, আমলাই, নারয়নপুর, কাঞ্চনগরিয়া, পোদমুর ভালুইপাড়া, সেহালায় ও গৌরীনগর-সহ ২০টি গ্রামের মানুষ এই ফেরিঘাটের উপর নির্ভরশীল। রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। ওই সময়ে শক্তিপুর এলাকার লোকজনকে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে অতিকষ্টে নজর পার হতে হয়। জোরগাছি মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক সত্যনারায়ণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চৈত্র মাসে নদীতে জল থাকে না। তখন নৌকা চলাচল বন্ধ থাকে। জল-কাদা ভেঙে ছাত্র ও শিক্ষকদের যাতায়াত করতে হয়। আর সাইকেল ও মোটরবাইকে চেপে তখন কেউ নদীর এপার-ওপার করতে পারেন না।’’ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা ভরতপুরের বিধায়ক কংগ্রেসের কমলেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই সেতু হওয়ার কথা ছিল ১২ বছর আগে। কিন্তু কাজ শুরু করা যায়নি। কারণ প্রশাসন শেষ পযর্ন্ত কাজ শুরুর অনুমতি দেয়নি।’’
বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও দিলীপ বাগদি বলেন, ‘‘আমিও শুনেছি ওই ঘাটে সেতু তৈরি হবে। কিন্তু কেন যে আজও তা হল না, বলতে পারব না।’’ কেউ কিছু জানেন না। আর এরই মধ্যে প্রাণ হাতে করে বাবলার দুই প্রান্তের মানুষকে পার হতে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy