Advertisement
E-Paper

এক পাশ বন্ধ রেখে রাস্তা সারাই চলছেই

শুক্রবারের দুর্ঘটনা নিয়ে গত চার বছরে বহরমপুর থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত ৫২৪টি দুর্ঘটনার সাক্ষী ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার মধ্যে অন্তত ১০৭টির কারণ এক দিকের রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল ও মুখোমুখি ধাক্কা।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২১
শোকাহত। —নিজস্ব চিত্র।

শোকাহত। —নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় সড়কের এক দিকের লেন আটকে মেরামতির কাজ চলায় শুক্রবার পাশের লেনে ঢুকে ট্রাকের মুখে পড়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। পরিণতি, ধাক্কায় দুমড়ে আগুন ধরে গিয়ে চার জনের মৃত্যু।

তার পরও ছবিটা কিন্তু পাল্টায়নি।

শনিবার সকাল থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে ফের বন্ধ রাখা হয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একটা দিক। ফলে, রঘুনাথগঞ্জের তালাই থেকে উমরপুর পর্যন্ত দু’মুখো গাড়ি চলাচল করেছে একটা দিক দিয়েই।

শুক্রবারের দুর্ঘটনা নিয়ে গত চার বছরে বহরমপুর থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত ৫২৪টি দুর্ঘটনার সাক্ষী ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার মধ্যে অন্তত ১০৭টির কারণ এক দিকের রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল ও মুখোমুখি ধাক্কা। গত বছর মে মাসে ফরাক্কার বল্লালপুরের কাছে তাড়াহুড়োয় লেন ছেড়ে পাশের রাস্তায় ঢুকে পড়েছিল একটি পুলকার। লরির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হয় চালক ও চার ছাত্রের। গত ফেব্রুয়ারিতে সুতির আহিরণ সেতুর কাছে লেন ভেঙে ধেয়ে আসা দু’টি লরির মাঝে পড়ে লছিমনের চালক-সহ সাত আরোহীর মৃত্যু ঘটে। মোটরবাইকের লেন ভাঙা ও দুর্ঘটনা তো নিত্য নৈমিত্তিক।

ট্রাক চালকেরা অবশ্য লেন ভাঙার বড় দায়টাই চাপিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উপরে। হরিয়ানা থেকে ট্রাক নিয়ে আসছেন সর্দার বিজন সিংহ। যাবেন অসম। দুপুরে তালাই মোড়ে এক হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, “মাসে অন্তত তিন বার উত্তরবঙ্গ যাতায়াত করি এই রাস্তা দিয়ে। প্রায়ই দেখি উমরপুর থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত রাস্তার এক দিক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে সারাইয়ের নামে। দেশের সব জাতীয় সড়ক দিয়েই যাতায়াত করি আমি। কোথাও এত দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা বন্ধ করে কাজ করা হয় না।”

শুক্রবারের দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, মথুরাপুরের প্রণব মণ্ডলের আক্ষেপ, “দীর্ঘদিন ধরে এক দিকের রাস্তা বন্ধ করে রাখায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে। শুক্রবার সকালে তালাইয়ের কাছে লরি ও লছিমনের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয় নাগর মণ্ডল নামে বছর উনিশের একটি ছেলে। তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ব্যারিকেড দিয়ে লেন বন্ধ করলেও অন্য লেনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও কর্মী থাকেন না। তার ফলেই এত দুর্ঘটনা ঘটছে।”

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রকল্পের মালদহের প্রকল্প আধিকারিক দিনেশ হংসরিয়া অবশ্য দাবি করেন, লরিতে ওভারলোডিংয়ের কারণে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক খারাপ হচ্ছে। বারবার সারাতে হচ্ছে। তার জন্য অন্তত এক ফুট গর্ত করে তুলে ফেলতে হয় পিচের আচ্ছাদন। ফলে সময় লাগে। তাঁর কথায়, “বড় জোর ৫ থেকে ১০ কিলোমিটারের লেন আটকে সারাই হয়। ওই অংশে দু’দিকের গাড়ির চালকদেরই সতর্ক থাকা উচিত। কিন্তু শুক্রবার দুর্ঘটনায় পড়া দু’টি গাড়িরই গতি ছিল অস্বাভাবিক বেশি।”

Ambulance Accident dead road accident রঘুনাথগঞ্জ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy