Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মেয়ের বিয়েতে কলমচারা পেলেন নবাব

বিয়ে— দু’অক্ষরের ভারী নিবিড় শব্দটি ফিকে হয়ে না এলেও কোথায় যেন ছিঁড়ে গিয়েছে তার সংস্কার, রীতিনীতি, আদব কায়দা, পুরনো সেই বিয়ের সিপিয়া রঙের পথ ধরে হাঁটল আনন্দবাজার খুশি হয়ে রাজা তাঁর এক মাত্র মেয়ে মণিমালার সঙ্গে গুপীর বিয়ে দিতে রাজি হন। বাঘার কি হবে? এগিয়ে এলেন হাল্লারাজ। তাঁর মেয়ে মুক্তমালাকে তুলে দিলেন বাঘার হাতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৯
Share: Save:

হল্লার দুষ্টু মন্ত্রীকে শাস্তি দিয়েছিলেন গুপী-বাঘা। তার ফলে শুন্ডির প্রজাদের মুখে ফিরেছিল রা!

খুশি হয়ে রাজা তাঁর এক মাত্র মেয়ে মণিমালার সঙ্গে গুপীর বিয়ে দিতে রাজি হন। বাঘার কি হবে? এগিয়ে এলেন হাল্লারাজ। তাঁর মেয়ে মুক্তমালাকে তুলে দিলেন বাঘার হাতে। দুই রাজাই রাজকন্যার সঙ্গে তাঁদের জামাইদের উপহার দেন রাজ্যপাট। সিনেমার গুপী-বাঘার বিয়ের মতো লালবাগের নবাবি বিয়েতেও অভিনব উপহার সামগ্রীর বেশ চল ছিল। এমনকী প্রিয় আমগাছের চারা উপহার পেতে এক আমীরের ছেলের সঙ্গে লালাবাগের এক নবাব তাঁর প্রিয় কন্যার বিয়েও দিয়েছিলেন।

আসলে রাজাই হোক, আর প্রজা, সবার বিয়েতেই উপহার সামগ্রীর অনিবার্য অনুসঙ্গ রয়েছে। রয়েছে তাৎপর্য। অতীতে আমজনতার ম‌ধ্যে উপহার হিসাবে কাঁসা-পিতলের বাসনের বেশ চল ছিল। উপহার সামগ্রী উপর নির্ভর করত দাতার মর্যাদাবোধ। ধুতি পাঞ্জাবি পরে নব বিবাহিত জামাই চলেছেন শ্বশুরবাড়ির এক কুটুম্বের বিয়ের অনুষ্ঠানে। হাতে ঝুলছে রঙিন কাগজে মোড়া পেল্লাই সাইজের পিতলের একটি ঘড়া। হঠাৎ সেই রঙিন কাগজে মোড়ানো একটি অংশ ছিঁড়ে ফেলেন
তাঁর স্ত্রী।

জামাই বলেন, ‘‘কর কি! কর কি! এ যে বিয়ের উপহারের ঘড়া।’’ স্ত্রীর জবাব, ‘‘তার জন্যই তো ছিঁড়লাম। মা-বাবা দেখবে তাঁদের জামাই পিতলের ঘড়া দিয়েছে। আমার মান বাড়বে তাতে।’’ লালবাগের এক নবাবকে নিজের বাগানের একটি নতুন গাছের আম খাওয়ালেন দরবারের এক আমীর। সেই স্বাদে নবাব বেশ মোহিত। তিনি চাইলেন ওই আমগাছের একটি কলমচারা। জোড় হাত করে আমির বলেন, ‘‘হুজুরে নবাব! আর যা চাইবেন, তাই দেব! গুস্তাকি মাফ করুন। ওই আমগাছের কলমচারা চাইবেন না হুজুর!’’

নবাবও নাছোড়। অবশেষে আমীরের মেয়ের সঙ্গে নিজের ছেলের বিয়ে দিয়ে নবাব আদায় করেন প্রিয় আমগাছের কলমচারা। মিরজাফরের বর্তমান উত্তরাধিকার ‘ছোটে নবাব’ বলেন, ‘‘নবাবি ওই আমের নাম কোহিতুর!’’

বিয়ে বাড়িতে পৌঁছতেই তাঁর হাতে সোনার কলম দিয়ে বরণ করে নেন তাঁর শ্বশুরমাশাই। সেকালে ভোজ খাওয়ার আগে নগদ টাকায় উপহার দেওয়ার চল ছিল। সেই টাকা দেওয়া হত একটি বেতের ধামায়। তা নিয়ে লোকচলিত একটি ছড়া আজও শোনা যায়— ‘ফেলো আনা, খাও খানা’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Rituals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE