Advertisement
E-Paper

সচেতন হচ্ছেন ক্রেতা, জেলায় বাড়ছে মামলা

চিকিৎসকের গাফিলতিতে হাত কেটে বাদ দিতে হয় এক ছাত্রীর। কৃষ্ণনগরের দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছিলেন হাঁসখালির ওই ছাত্রীর পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৯

চিকিৎসকের গাফিলতিতে হাত কেটে বাদ দিতে হয় এক ছাত্রীর। কৃষ্ণনগরের দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছিলেন হাঁসখালির ওই ছাত্রীর পরিবার। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে দশ লক্ষ টাকাই ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে ওই দুই চিকিৎসককে। ছাত্রীর বাবা বলছেন, ‘‘চিকিৎসকের গাফিলতি তো ছিলই। তবে বিষয়টি আমাদের দুর্ভাগ্য বলেই ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয় এক যুবকের পরামর্শে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ক্ষতিপূরণ পেয়েছি।’’

কৃষ্ণনগরের পালপাড়ার এক যুবক নতুন ফ্রিজ কিনেছিলেন। কিন্তু বাড়িতে নিয়ে আসার পরে সেটা আর চলছিল না। কথা ছিল, ওই কোম্পানির লোকজন বাড়িতে এসে ফ্রিজটা ঠিক করে দেবেন। কিন্তু মাসখানেক ধরে তাঁরা কেউ আসেননি। ফ্রিজও ব্যবহার করতে পারেননি ওই যুবক। জেলার উপভোক্তা বিষয়ক দফতরে গিয়ে তিনি ঘটনাটি জানান। ওই কোম্পানির লোকজনকে ডেকে বিষয়টির মধ্যস্থতা করে ওই দফতর। পরে ফ্রিজ কোম্পানি ওই যুবকের বাড়িতে নতুন ফ্রিজ পাঠিয়ে দেয়। সঙ্গে প্রায় এক মাস ফ্রিজ ব্যবহার করতে না পারার জন্য ক্ষতিপূরণও।

ছাতুর বিজ্ঞাপনের বাহার দেখে চমকে গিয়েছিলেন বেথুয়াডহরির এক যুবক। দেরি না করে দোকান থেকে এক প্যাকেট ছাতুও কিনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে প্যাকেট খুলেই বিপত্তি। সে ছাতু খাওয়া তো দূরের কথা, দুর্গন্ধে টেকা দায়। দোকানদারও সে ছাতু ফেরত নেননি। মাস কয়েক আগের ওই ঘটনায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দারস্থ হয়েও কিছু করতে পারেননি পেশায় চিকিৎসক ওই যুবক। কারণ, তাঁর কাছে ছাতু কেনার পাকা বিল ছিল না। সেই থেকে খুব শিক্ষা হয়েছে তাঁর। ওই যুবক বলছেন, ‘‘ছাতু হোক বা জুতো, পাকা বিল ছাড়া জিনিস কিনি না মশাই!’’

ঠকতে ঠকতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ক্রেতারা কি তাহলে সচেতন হচ্ছেন?

গত কয়েক বছরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলার সংখ্যা অন্তত তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। নদিয়া জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে মামলা হয়েছে ১৪৭টি। রায় ঘোষণা হয়েছে ১১৬টি। ২০১৫ সালে মামলা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৩। রায় ঘোষণা হয়েছে ১১৮টির। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত মামলার সংখ্যা ১১৫। রায় ঘোষণা হয়েছে ২৭টি। ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দাবি, নাগাড়ে প্রচার, স্কুল কলেজের পড়ুয়াদের সচেতন করা ও আদালতের রায়ের পরে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ঘটনা মানুষকে ক্রেতা সুরক্ষা আইন সম্পর্কে আরও উৎসাহিত করেছে।

কৃষ্ণনগরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দুই আইনজীবী মকবুল রহমান ও প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, আগের থেকে আদালতে মামলার সংখ্যা অনেক বাড়ছে। ক্রেতারাও রীতিমতো পাকা রসিদ-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে আসছেন। বিমা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, টেলিফোন, গ্যাস, এমনকী ব্যাঙ্কের কাজেও প্রতারিত হয়ে মানুষ সুবিচার পাচ্ছেন। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিও হচ্ছে।

নদিয়ার উপভোক্তা বিষয়ক ও ন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন অধিকার দফতরের সহ- অধিকর্তা সুব্রত মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই আমরা ক্রেতাদের সচেতন করছি। পড়ুয়াদের নিয়েও আমরা নানা অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। এখন তারই সুফল মিলছে।’’

awareness Consumers forum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy