Advertisement
E-Paper

লাঠি-উইকেটেই কাজ হাসিল, মরচে লোহায়

পঞ্চায়েত নিবার্চন মানেই সকেট বোমার রমরমা ডোমকলে। মুড়ি মুড়কির মত প্রায় রাতেই ওই বোমার শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। আর এই বোমা তৈরীর মূল উপাদান বাতিল লোহার পাইপের টুকরো মেলে হার্ডওয়ার দোকানে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বস্তা ভর্তি ছোট ছোট লোহার পাইপ, কোনওটা ভাঙা কোনওটা বা প্রায় আস্ত। ডোমকলের এক হার্ডওয়ার দোকানে পড়ে ছিল দিন কয়েক ধরে। শুক্রবার দুপুরে দোকান মালিক কর্মীকে ডেকে জানিয়ে দেন, ওগুলোর আর দরকার নেই, ফেলে দাওয় গুদামে।

বিক্রি করলেও তো দু’পয়সা আসত! মুতকি হেসে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘কোদালের ডাটেই কাজ খতম, ওগুলো আর বিকবে বলে মনে হয় না!’’

পঞ্চায়েত নিবার্চন মানেই সকেট বোমার রমরমা ডোমকলে। মুড়ি মুড়কির মত প্রায় রাতেই ওই বোমার শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। আর এই বোমা তৈরীর মূল উপাদান বাতিল লোহার পাইপের টুকরো মেলে হার্ডওয়ার দোকানে। কিন্তু এবার সেই বাজার শূন্য। ব্যবসায়ীদের দাবি, পঞ্চায়েতের এই মরশুমে হাজার হাজার সকেট বিক্রি হয় তাদের। এ বার নির্বাচনেও তার বরাত ছিল কিন্তু তেমন বিক্রি হয়নি।

কেবল সকেট বোমা নয়, মশলার বড় কারবারিদেরও মাথায় হাত পড়েছে এবার। প্রায় বিনা বাধায় মনোনয়ন পর্ব মিটে যাওয়ায় মজুত মশলার কিছুই প্রায় বিকোয়নি।

বেলডাঙার এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ভোট এলে আমাদের বাজার চড়ে। বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটের সময় এই বাজার চড়চড় করে বাড়তে থাকে। পাঁচ বছরে এই সময়টার জন্য. আমরা মুখিয়ে থাকি। কিন্তু এ বার কোনও ব্যবসায়ই নেই।’’

একই কারণে অনেকটাই দায়মুক্ত শোনাচ্ছে নদিয়া জেলা পুলিশের কল্যাণী-গয়েশপুরের দায়িত্বে থাকা থানাগুলিকে।

কল্যাণী থানার দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত-সগুনা ও কাঁচরাপাড়াতে ভোট হচ্ছে। এ বার সেখানে দায় যেন অনেক কম। কারণ, দুটি পঞ্চায়েতেই শাসকদল প্রায় বিনা লড়াইয়ে জিতে গিয়েছে। বোমা তৈরির মাল-মশলার তেমন দরকারই পড়েনি।

তবে সগুনায় বছর দুয়েক আগে সিআইডি অভিযান চালিয়ে এক বার অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস পেয়েছিল। সেখানে পিস্তল থেকে দেশীয় কায়দায় বানানো বন্দুক মিলেছিল। চাপা উদ্বেগ সেখানে রয়েই গেছে। তবে, সে জেলায়, ভোটের মুখে বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রশস্ত্রের আমদানি যে বেড়েছে না মেনে নিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।

জেলার এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘নাকাশিপাড়ার এক অস্ত্র কারবারি আমাদের কাছে স্বীকার করেছে, আগের নির্বাচনে অস্ত্রের কারবারে যো বোলবোলাও ছিল এ বার তার ঘাটতি আছে।’’ টানা কয়েক বছর অস্ত্রের কারবার করেছে। মূলত ভিন রাজ্যের অস্ত্র মুর্শিদাবাদ থেকে নিয়ে এসে বিক্রি করত জেলার বিভিন্ন জায়গায়। ক্ষেত্র বিশেষে চলে যেত বাংলাদেশেও। রানাঘাট থানায় কর্মরত ছিলেন এক পুলিশ আধিকারিক আবার জানিয়ে রাখছেন, ‘‘চাকদহ এলাকায় এ বারও আগাম মজুত রয়েছে অস্ত্রের।’’ আর তা নিয়ে চাপা আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার পুলিশর-প্রশাসনের।

তবে, এই আবহে ডোমকলের সাধারণ মানুষ কিন্তু এ বারের ভোট নিয়ে খুশি। তাদের কথায় যে যায় লঙ্কায় সেই রাবণ, এ ছবি এত দিন দেখে এসেছেন তাঁরা। ফলে ডোমকলে য়তই এক তরফা ভোট হয় ততই ‘মঙ্গল’। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘অন্তত লাশের পাহাড় আর গুলি-বোমার আতঙ্কে ভুগতে হবে না।’’

(তথ্য: সুডাউদ্দিন, মনিরুল শেখ)

West Bengal Panchayat Elections 2018 Miscreant Stick Wicket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy