Advertisement
E-Paper

গন্ডগোলের সময়ে পুলিশ কোথায়, উঠছে প্রশ্ন

তা হলে পুলিশ কোথায় ছিল? বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘কেন? যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানেই ছিল।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:৫৬
দাঁড়িয়ে রইল পুলিশ। সোমবার কান্দিতে। নিজস্ব চিত্র

দাঁড়িয়ে রইল পুলিশ। সোমবার কান্দিতে। নিজস্ব চিত্র

শোনা গিয়েছিল, পুলিশ থাকবে। পুলিশ ছিল। আশঙ্কা ছিল, অশান্তি হতে পারে। অশান্তি হয়েছে। সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আরও একটি বাড়তি দিনে বেধড়ক মার খেলেন সাংবাদিক, বিধায়ক, এমনকী তৃণমূলের নেতাও।

তা হলে পুলিশ কোথায় ছিল? বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘কেন? যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানেই ছিল।’’

সাত দিনের মনোনয়ন পর্ব মেটার পরেই আরও এক দিন বাড়ানোর কথা হয়েছিল। খবর রটেছিল, তেমনটা হলে পুলিশকে ব্যারাকে বসে থাকার জন্য নবান্ন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিনও তেমন কোনও নির্দেশ ছিল কিনা, তা অবশ্য জানা যায়নি।

তবে কার্যক্ষেত্রে পুলিশ হয় ব্লক অফিসে ঢুকে বসে থেকেছে অথবা সামনে লোকজনকে মার খেতে দেখে দাঁড়িয়ে থেকেছে বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। এ দিন বহরমপুরে প্রার্থীদের নিয়ে স্থানীয় বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী। অভিযোগ, তৃণমূলের পতাকা হাতে কিছু লোক পথ আটকে মারধর করে মনোজ ও তাঁর সঙ্গীদের। মনোজের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজনেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করল। পুলিশ শুধু দাঁড়িয়ে দেখল।’’

এ দিন রঘুনাথগঞ্জ ছিল পুলিশে ছয়লাপ। রাস্তায় নাকাবন্দি ছিল। তাও বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া তো দূরের কথা, তাঁরা ব্লক অফিসেই পৌঁছতে পারেননি। কেন? রঘুনাথগঞ্জের ব্লক কংগ্রেস সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পা বলেন, ‘‘পুলিশের নাকা ও ব্লক অফিসের মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার ফাঁকা পথ। সেখানে পুলিশ ছিল না। ছিল তৃণমূলের লোকজন। যা হওয়ার হয়েছে।’’

কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর অভিযোগ, সমশেরগঞ্জে পুলিশ ও দুষ্কৃতীরা একসঙ্গে থেকেই হুমকি দিয়ে গিয়েছে। সুতির কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন রেজার অভিযোগ, ব্লক অফিস এ দিন আগলে রেখেছিল পুলিশ ও তৃণমূলের লোকজন। ফলে তাঁরা ঢুকতেই পারেননি। ডোমকল পুরাতন বিডিও মোড়ে এ দিন প্রহৃত হয়েছেন চিত্র সাংবাদিক সাফিউল্লা ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, সেই সময় ঘটনাস্থল থেকে পঞ্চাশ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে গল্প করছিল পুলিশ। সব দেখেও তারা কিছু করেনি। এসডিপিও মাকসুদ হাসান অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’ বেলডাঙাতেও খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রহৃত হয়েছেন সাংবাদিক সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, এ ক্ষেত্রেও ঘটনার সময় পুলিশকে দেখা যায়নি। সেবাব্রত কোনও রকমে উঠে আশ্রয় নেন এক পরিচিতের বাড়িতে। প্রায় ২০ মিনিট পরে ওসি সমিত তালুকদার পুলিশ বাহিনী নিয়ে সেবাব্রতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

বিডিও শুভ্রাংশ মণ্ডল বলছেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। রবিবার রাতেও পুলিশকে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এলাকার নিরাপত্তার দেখার দায়িত্ব তাদের। ওসির সঙ্গে কথা বলব।’’ ওসি সমিত তালুকদার বলছেন, ‘‘বিডিও অফিসে মাত্র দু’চার জন পুলিশ ছিল। বাইরে ২০০ মিটারের মধ্যে আমরা ছিলাম। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে বিডিও অফিস থেকে ৭০০ মিটার দূরে। সেখানে কোনও পুলিশ ছিল না। সব জায়গায় ফোর্স দেওয়া সম্ভব নয়। সবটা জেনে ওখানে পৌঁছতেও তো সময় লাগবে। যখন বিষয়টি জেনে সেখানে গিয়েছে, তখন ওরা মেরে চলে গিয়েছে।’’

এ দিন নদিয়ার হাঁসখালি, চাপড়া, ফুলিয়া ও শান্তিপুরেও পুলিশ দর্শকের ভূমিকাতে ছিল বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। হাঁসখালির বিজেপি নেতা তাপস ঘোষের অভিযোগ, এ দিন বাস ভাঙচুর ও দলীয় কর্মীদের মারধর করার সময় পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে।

নদিয়ার পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলছেন, ‘‘এমন অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। সর্বত্রই এ দিন পুলিশ সক্রিয় ছিল।’’ মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারকে বহু বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।

murshidabad police manoj chakraborty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy