Advertisement
E-Paper

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামেই গেলেন না পার্থ, কটাক্ষ বিজেপির

মুখ্যমন্ত্রীর ‘নির্দেশে’ ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। সঙ্গে রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী। অথচ ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগুলিতে পা-ই রাখলেন না তিনি। যা নিয়ে আফসোসের কম নেই গ্রামবাসীদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরাও। শনিবার হরিণঘাটার নগরউখড়া-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চান্দা গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ত্রাণশিবিরে যান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০০:৩৯

মুখ্যমন্ত্রীর ‘নির্দেশে’ ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। সঙ্গে রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী। অথচ ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগুলিতে পা-ই রাখলেন না তিনি। যা নিয়ে আফসোসের কম নেই গ্রামবাসীদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরাও।

শনিবার হরিণঘাটার নগরউখড়া-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চান্দা গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ত্রাণশিবিরে যান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী উজ্জল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায়, জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, জেলাশাসক বিজয় ভারতী, পুলিশ সুপার ভরতলাল মীনা-সহ অন্যান্যেরা। ওই শিবিরে পাঁচ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দশ হাজার টাকা ও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে বাসনপত্র, চাল, ডাল তেল, দুধ, মুড়ি, দুধ, বিস্কুট-সহ অন্যান্য জিনিসও তুলে দেওয়া হয়। ঘণ্টা খানেক পরে এখান থেকে মন্ত্রী চলে যান হরিণঘাটা বিডিও অফিসে। সেখানে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

পার্থবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এখানে ত্রাণ দিতে এসেছি। তাঁর নির্দেশ, কোনও মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে।’’ তিনি জানান, রাজ্যে সাত লক্ষ মানুষ দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। নদিয়ার ১০টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সব রকমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘এই জেলাতেই চার জন মারা গিয়েছে। তাঁদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, রাজ্যের যে সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে, সেই সব এলাকার স্কুল-কলেজ এবং যে সব স্কুল কলেজে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, সেই সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জেলা শাসককে।

বুধবারের ঝড়ে হরিণঘাটার নগরউখড়া ১ এবং ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দাসবেড়িয়া, সোনাকুড়া, উত্তর চান্দা, আদিবাসী পাড়া ও দক্ষিণ চান্দা গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রচুর গাছপালা উপড়ে পড়ে। বহু ঘরের চালা উড়ে যায়।

এ দিকে, গ্রামে মন্ত্রীরা না যওয়ায় শান্তিসরণী মোড়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের অভিমান উগরে দিচ্ছিলেন দক্ষিণ চান্দা গ্রামের জনাকয়েক মহিলা। তাঁরা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম দুই মন্ত্রী আমাদের গ্রামে ঢুকবেন। আমাদের দুঃখ দুর্দশার খোঁজ নেবেন। কিন্তু তাঁরা এলেন না।’’

বিজেপির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তারকনাথ সরকার বলেন, ‘‘কমপক্ষে ৩০টি গাড়ি নিয়ে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এলেন। ত্রাণ দিয়ে ফিরে গেলেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন না। তাঁদের উচিত ছিল সেখানে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলা।’’ তিনি জানান, এ দিনই বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসীম সরকার ও সম্পাদিকা দীপা বিশ্বাস ওই এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, মন্ত্রীদের আগমন উপলক্ষে ‘তৃণমূল কর্মীদের দাপাদাপিতে’ তাঁরা ওই এলাকায় ঢুকতে পারেননি। শেষে ঘটনাস্থল থেকে বেশ খানিকটা দূরে ঝিকরা বাজারে দলীয় অফিসে বসে খোঁজখবর নেন।

প্রত্যুত্তরে হরিণঘাটা ব্লকের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের প্রাণী ও মৎস্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ চঞ্চল দেবনাথ বলেন, ‘‘কে কী বলল জানি না। সব গ্রামে তো মন্ত্রীদের যাওয়া সম্ভব নয়। তাই ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের এক জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছিল।’’

জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, ঘূর্ণি ঝড়ে জেলার ৩১২টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণের জন্য ৬৮টি শিবির খোলা হয়েছে। জেলায় ১২৩৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৫৫ হাজার বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৪০ কিলোমিটার রাজ্য সড়ক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।

BJP Partha Chatterjee ranaghat trinamool bijoy bharati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy