চালু হওয়য়ার পথে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ সেতু। —নিজস্ব চিত্র
অবশেষে জট কাটতে চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আজিমগঞ্জ-নসিপুর রেলসেতুর থমকে থাকা বকেয়া কাজ শুরু হওয়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। ক্ষতিপূরণ, জমির দাম ও চাকরি-বিতর্কের জেরে ১১২ জনের ৩ একর জমি অধিগ্রহণ এতদিন থমকে ছিল। ২৭ সেপ্টেম্বর বহরমপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত জমিজট কাটাতে জেলাশাসককে নির্দেশ দেন। তারপর থেকে প্রশাসনের তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে। বুধবার থেকে আজিমগঞ্জের দিয়াড় মাহিনগরে শিবির গড়ে জমিদাতাদের সম্মতি আদায়ের কাজ চলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেই শিবিরের ঝোলানো হয়েছে ২০টি সিসিটিভি। জমি অধিগ্রহণ দফতরের মুশির্দাবাদ জেলার বিশেষ আধিকারিক শ্যামল পাল বলেন, ‘‘জমি ও বাড়ির মালিকদের ক্ষতিপূরণ-সহ যাবতীয় বিবাদের নিষ্পত্তি হয়েছে। ওই শিবির থেকে জমির মালিকদের টাকা দেওয়ার পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণ করতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। শিবির চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।’’ জেলাশাসক ওয়াই রত্মাকার রাও বলেন, ‘‘সপ্তাহ খানেকের মধ্যে জমি সংক্রান্ত সব জটিলতা কেটে যাবে।’’
পূর্বপাড়ে নশিপুর হল্ট ও পশ্চিমপাড়ে আজিমগঞ্জের জংশনের মধ্যবর্তী এলাকায় ভাগীরথীর উপর সেতু নির্মাণ করে শিয়ালদহ ও হাওড়া বিভাগের দুটি লাইনকে সংযুক্ত করার প্রকল্প নেওয়া হয়। তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০০৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর সেতুর শিলান্যাস করেন। বছর ছয়েক আগে ৯০ কোটি টাকা খরচ করে ভাগীরথীর উপর রেলসেতু নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ বার প্রয়োজন লিঙ্করোড। মুর্শিদাবাদ স্টেশন থেকে রেলসেতুর পূর্বপাড় পর্যন্ত এবং রেলসেতুর পশ্চিমপাড় থেকে আজিমগঞ্জ জংশন পর্যন্ত দু’টি লিঙ্ক রোড় প্রয়োজন। পূর্বপাড়ে ৪৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে প্রায় ৪ কিলোমিটার লিঙ্করোড নির্মাণ করা হয়েছে বছর চারেক আগে। তারপর চার বছর ধরে ভাগীরথী দিয়ে জল গড়িয়েছে বিস্তর। চাকরি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে মাত্র ৭ একর জমির জট না খোলায় পশ্চিমপাড়ের লিঙ্করোড নির্মাণের কাজ ভাগীরথীর বিশ বাঁও জলে তলিয়ে যায়।
পশ্চিমপাড়ের লিঙ্ক রোড়ের জন্য প্রয়োজন সাত একর জমি। ওই জমির মালিক ছিলেন ১৩০ জন। কিন্তু চাকরির আশায় মালিকেরা বংশের আরও অনেককে অল্প পরিমানে জমি দেন। ফলে মালিকের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩৬৫। তার মধ্যে ২৫৩ জন জমির দাম ও ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন। ১১২ জন টাকা নেননি। তাঁদের দাবি, ‘‘এক হাতে জমি দেব, অন্য হাতে চাকরি।’’ এই পরিস্থিতিতে অনিচ্ছুক জমি মালিকদের রাজি করাতে মাঠে নামেন গত বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী অসীম ভট্ট।
অসীমবাবু বলেন, ‘‘রেলের আইন মেনে জমিদাতাদের সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। যাঁরা রেলের চাকরি পাবেন না তাঁদের অন্য কোনও কাজ দেওয়া হবে। মালিকরা জমি দিতে রাজি হয়েছেন।’’ ফলে জমিজট কাটতে চলেছে। গত দু’দিনে ৩ জন জমি দিয়েছেন। আরও অনেকেই জমি দিতে এগিয়ে আসছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy