ভেঙে পড়েছেন মৃতের আত্মীয়েরা। জ়িরো পয়েন্টে। নিজস্ব চিত্র।
বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে ছেলে থাকতেন এ দেশে। বিবাহিত বোন ও অন্যান্য আত্মীয়েরা থাকেন সীমান্তের ও পারে, বাংলাদেশে। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে শেষবারের মতো দেখতে চেয়ে ছিলেন মেয়ে। বিএসএফের চেষ্টায় জ়িরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। সেখানেই বাবাকে চোখের জলে শেষ বিদায় দিলেন মেয়ে। গত শুক্রবার বিকেলে এমন ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল কৃষ্ণগঞ্জের পুট্টিখালি গ্রাম। বিএসএফের এমন মানবিক পদক্ষেপকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্থানীয়েরা।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় মাহাবুল মণ্ডলের (৭২)। সে খবর যায় সীমান্তের ও পারে মেয়ের কাছে। বৃদ্ধের মেয়ে ও আত্মীয়েরা বৃদ্ধকে শেষবারের মতো দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তার পরেই বৃদ্ধের বৌমা লিপি বিবি সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের আউটপোস্ট হাজির হন। তাঁর আবেদনে সাড়া দেয় বিএসএফ। দ্রুত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। সিদ্ধান্ত হয় দু’দেশের পক্ষ থেকে জ়িরো পয়েন্টে যাওয়ার বন্ধ দরজা খুলে দেওয়া হবে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ জওয়ানেরা বৃদ্ধের মেয়ে ও সে দেশে থাকা অন্যান্য আত্মীয়দের সীমান্তে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। বিকেলে দু’দেশের জওয়ানদের উপস্থিতিতে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সীমান্তের জ়িরো পয়েন্টে। সেখানে বৃদ্ধকে চোখের জলের শেষ বিদায় জানান ও পার বাংলায় থাকা মেয়ে ও আত্মীয়েরা।
মৃতের ছেলে মারতক মণ্ডল বলেন, ‘‘অল্প সময়ের মধ্যে বোন ও অন্যান্য পরিজনদের পাসপোর্ট, ভিসার মাধ্যমে এ দেশে আসা সম্ভব ছিল না। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাই বাধ্য হয়ে বিএসএফ আধিকারিকদের বিষয়টি জানায় স্ত্রী। শেষ পর্যন্ত সীমান্তের জ়িরো পয়েন্টে বাবার দেহ নিয়ে যাই। সেখানে বোন ও আত্মীয়েরা হাজির হয়। বিএসএফের এমন পদক্ষেপ আমি কখনই ভুলব না।’’ বিএসএফের ডিআইজি অমরেশকুমার আর্য বলেন, ‘‘আমাদের জওয়ানেরা সীমান্তে প্রতিনিয়ত সজাগ থেকে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি সীমান্তের বাসিন্দাদের বিভিন্ন সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। শুধুমাত্র মানবিক কারণেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy