Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হুঙ্কারে-অসূয়ায় ডেভিডে-তাহেরে

তৃণমূলের এক পুরনো কর্মী বলছেন, ‘‘কংগ্রেস থেকে এসে ডেভিডের প্রার্থী হয়ে যাওয়াটাও অনেকে মেনে নিতে পারেননি। ভোটের কাজে বসে গিয়েই তাঁরা একটা প্রচ্ছন্ন প্রতিবাদ করেছেন।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কৌশিক সাহা ও সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
কান্দি ও নওদা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০১:৪৫
Share: Save:

তাঁদের জন্যই ফের ভোট। দুপুর পোড়া গরমে ফের প্রচার, দলীয় কর্মী পার্টি অফিসের দরজায় ঘাম মুছে বলছেন, ‘‘আর পেরে উঠছি না দাদা, তবু...।’’ তবু, ঝান্ডা, তবু গলায় মেলানো গলা, তবু তাঁদেরই জন্য লড়াই করা।

কিন্তু, যাঁদের জন্য ফের এই লড়াই, ফের ঝামা পোড়া ভোট যুদ্ধ—তাঁরা কী বলছেন?

অলিগলি সর্বস্ব কান্দির মাঠে-ময়দানে, গলির মোড়ে স্ট্রিট কর্নারে কান্দির বিদায়ী বিধায়ক অপূর্ব সরকার হাবেভাবে, গলার স্বর ফুলিয়ে বলছেন, ‘‘বিধায়ক পদ ছেড়ে সাংসদের দৌড়ে নেমেছি। ধরে নিন জিতেই গেছি। তবু বলছি কেন্দ্রটা বহরমপুর হলেও কান্দির মানুষের পাশেই আছি আমি। এখানেই আছি।’’

আর নওদার আর এক দলবদলু আবু তাহের, মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী দৌড়ে নেমে যিনি শূন্য করেছেন নওদার আসন, না তাঁকে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে তেমন দেখা যাচ্ছে না। তবে ঠারে ঠোরে তিনিও জানাচ্ছেন, ‘‘নওদা বিধানসভায় তৃণমূলের জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই।তবে অন্য নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে সে ভাবে প্রচারে যাওয়া হচ্ছে না। তবে এ বারে নিশ্চয় প্রচারে বেরোব’’

এখানেই শেষ নয় অবশ্য, কংগ্রেস থেকে ‘দলবদলু’ দুই বিধায়ক লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হলেও তাঁদের ঘিরে কিঞ্চিৎ ‘ক্ষোভ’ যে ছড়িয়ে রয়েছে কান পাতলে তারও আঁচ মিলছে কিছু।

গরমে ঘামতে ঘামতে অপূর্ব যেমন ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘দলীয় কর্মীদের অনেককে বলছি, লোকসভা ভোটে কে কী করেছে, সেই সব তালিকা আমার কাছে চলে এসেছে। কে কত লিড দিচ্ছে সেটা আমি কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেব। কেউ ছাড় পাবে না। স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি কিন্তু।’’

ভোটের পরে তাঁরই জন্য ফের ভোট, কিন্তু তা বলে এমন হুমকি কেন? দলের অন্দরের খবর, ডেভিডের হাত ধরে অনেকেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে পা বাড়ালেও ভোটের আগে তাঁরা ফিরে গিয়েছিলেন পুরনো দলে।

তৃণমূলের এক পুরনো কর্মী বলছেন, ‘‘কংগ্রেস থেকে এসে ডেভিডের প্রার্থী হয়ে যাওয়াটাও অনেকে মেনে নিতে পারেননি। ভোটের কাজে বসে গিয়েই তাঁরা একটা প্রচ্ছন্ন প্রতিবাদ করেছেন।’’

উল্টো একটা ছবিও আছে। সেখানে হুঙ্কার কম, বরং অনুপস্থিতি রয়েছে। সেটাও কি এক ধরনের অসূয়া! প্রশ্নটা উঠছে, কারণ, নওদায় উপ-নির্বাচনে, বিদায়ী বিধায়ক আবু তাহের খানকে তেমন দেখা যাচ্ছে না। দলের অন্দরের খবর, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেনের সঙ্গে তাঁর ‘মধুর’ সম্পর্কের জেরেই নিজের মনোমত প্রার্থী দিতে পারেননি তাহের।

নওদায় তৃণমূলে দু’টো গোষ্ঠী। আবু তাহেরের প্রার্থী পদে তাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। দলের অন্দরের খবর, এ বার তাদের ‘সন্তুষ্ট’ করতেই বেছে নেওয়া হয়েছে শাহিনা মমতাজকে। প্রশ্ন উঠেছে আবুর অনুপস্থিতি কি সেই কারণেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bypoll Kandi TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE