Advertisement
E-Paper

দুই জেলায় ডেঙ্গি-থাবা

ইতিমধ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এক কলেজ পড়ুয়ার। প্রশাসন সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। সঙ্গে চলছে সচেতনতার প্রচারও। নদিয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদেও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৭

ডেঙ্গি আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে হরিণঘাটার বাসিন্দাদের। কয়েকটি গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। তবে তাদের প্রত্যেকেই যে ডেঙ্গি আক্রান্ত, তা নয়। তবে বেশ কয়েক জনের রক্তে মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু। ইতিমধ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এক কলেজ পড়ুয়ার। প্রশাসন সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। সঙ্গে চলছে সচেতনতার প্রচারও। নদিয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদেও।

পুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকেই হরিণঘাটার নগর উখড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। উত্তর চান্দা, দক্ষিণ চান্দা, দিঘলগ্রাম, শিঙ্গা-সহ বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর বাসিন্দা এখনও জ্বরে আক্রান্ত। নবমীর দিন উত্তর চান্দার কলেজ ছাত্র অমিত গায়েন (২৪)-এর মৃত্যু হয়। তার দিন কয়েক আগে তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। ওই গ্রামের বহু বাসিন্দা এখনও জ্বরে আক্রান্ত।

উত্তর চান্দার পাশাপাশি দক্ষিণ চান্দাতেও এখন ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গি। কী ভাবে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে, তা ভেবে পাচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতর। কয়েক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ার পরে পুজোর মধ্যেই প্রচার শুরু করে দেয় স্থানীয় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, হরিণঘাটা যুব তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ জানান, মূলত ডাবের খোলা, ভাঙা পাত্রে জল জমার ফলে সেই এলাকায় ডেঙ্গির মশা বংশবিস্তার করেছে। সেখান থেকেই ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি। তবে চঞ্চলের দাবি, ‘‘সব জ্বরই ডেঙ্গি নয়। অনেকেই সাধারাণ জ্বরের রোগী। তবে এলাকায় ডেঙ্গি ছড়ানোর ফলে সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। আমরা স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে এলাকায় এলাকায় ঘুরে প্রচার করছি। তাতে সাড়াও মিলেছে।’’

কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এখন প্রচার হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু যা হওয়ার তা এত দিনে হয়ে গিয়েছে। ডেঙ্গির মশা কার্যত ওই পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সব গ্রামেই ছড়িয়ে গিয়েছে। নগর উখড়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার দূরত্ব কম বলে অধিকাংশ জ্বরের রোগী হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এমনিতে হাবরা-সহ আশপাশের এলাকায় ডেঙ্গির দাপট ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে, হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীর ভিড়ে ঠাঁই নেই রব।

হরিণঘাটার বেশ কিছু জ্বরের রোগী কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে বর্তমানে এলাইজা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দু’দিনে হাসপাতালে মোট ১০৭ জন জ্বরের রোগীর রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল। ৩০ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়ে। বেসরকারি হিসেবে জেলায় মোট ন’শোর বেশি বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর তা মানতে রাজি নয়।

একই রকম ছবি মুর্শিদাবাদেও। এখানে পুরকর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ, কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের প্রচারে নামিয়েও ডেঙ্গি ঠেকানো যাচ্ছে না। সরকারি হিসেব বলছে, তিন মাসে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩৪২ জন বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সরকারি ভাবে মৃত্যুর খবর নেই। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরাক্কা ধুলিয়ান এবং সুতি মিলিয়ে গত দু’মাসে অন্তত ১২ জন জ্বরের রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের পরিবারের দাবি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়।

এ বছর ডেঙ্গি আক্রান্তর সিংহভাগ জঙ্গিপুরের বাসিন্দা। এত সচেতনতা সত্ত্বেও ডেঙ্গি কমছে না কেন? কি বলছে পুরসভা? ধুলিয়ান পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল সাহা বলেন, ‘‘২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ড নিচু। বৃষ্টিতে ওই সব এলাকায় জল জমছে। আর জমা জলে মশার জন্ম হচ্ছে।’’

Dengue Death Fever ডেঙ্গি Municipality Kanyashree কন্যাশ্রী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy