Advertisement
০৩ মে ২০২৪
শান্তিপুর কলেজ

প্রশ্নপত্রে তালা, চাবি নিয়ে তোলপাড়

তালাবন্দি প্রশ্নপত্র। বাইরে সময় বয়ে যাচ্ছে। তবে কী বানচাল হয়ে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা? না, শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। তবে একেবারে নির্ঝঞ্ঝাটে তা হয়নি। অধ্যক্ষের ঘরের দরজার কাচ খুলে (মতান্তরে ভেঙে) বের করা হয় প্রশ্নপত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:১৭
Share: Save:

তালাবন্দি প্রশ্নপত্র। বাইরে সময় বয়ে যাচ্ছে। তবে কী বানচাল হয়ে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা?

না, শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। তবে একেবারে নির্ঝঞ্ঝাটে তা হয়নি। অধ্যক্ষের ঘরের দরজার কাচ খুলে (মতান্তরে ভেঙে) বের করা হয় প্রশ্নপত্র।

শুক্রবার এনমই এক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল শান্তিপুর কলেজে। এদিন ছিল বিএ দ্বিতীয় বর্ষের পাশ কোর্সের সংস্কৃত তৃতীয় পত্রের পরীক্ষা। রানাঘাট কলেজের ছাত্রদের পরীক্ষা হচ্ছে এই কলেজে।

বরাবরের নিয়মমতো পরীক্ষার প্রশ্নপত্র রাখা ছিল অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ঘরে। কিন্তু, তিনি কলেজের কাজে এদিন বিকাশ ভবনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি থাকতে পারবেন না বলে নিজের ঘরের দেখভালের দায়িত্বে থাকা অরিন্দম রায় নামের এক অস্থায়ী কর্মীর কাছে সেই চাবি রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও এদিন কলেজে আসে‌ননি। ফোনে ধরা হলে তিনি জানান, কলেজেরই কাজে তিনি রানাঘাটে। মাথায় হাত পড়ে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা গোপা ভট্টাচার্যের। অরিন্দমবাবু জানান, কলেজের ক্যাশিয়ার সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অধ্যক্ষের ঘরের আর একটি চাবি রয়েছে। বিধি বাম হলে যা হয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সুশোভনবাবুও এদিন কলেজে আসেননি। এবার উপায়? এদিকে যে পরীক্ষার সময়ও এগিয়ে আসছে।

গোপাদেবী জানান, শেষ পর্যন্ত তাঁরা অধ্যক্ষকে পুরো ঘটনা জানান। তিনি বলেন, ‘‘অধ্যক্ষই আমাদের বলেন, তাঁর ঘরের দরজার কাচ খুলে প্রশ্নপত্র বের করতে। সেভাবেই আমরা প্রশ্নপত্র বের করি।’’ তবে কলেজ কর্মীদেরই একটি অংশের দাবি, কাচ ভেঙেই প্রশ্নপত্র বের করতে হয়েছে।

অবশ্য এই সব কারণে পরীক্ষার দেরি হয়নি বলে দাবি গোপাদেবীর। পরীক্ষার্থীরাও জানিয়েছেন, পরীক্ষা সময়মতোই শুরু হয়েছে। কলজের শিক্ষকরা অবশ্য জানিয়েছেন, চাবি না থাকায়, তাঁদের চরম টেনশনে পড়তে হয়েছিল। অধ্যক্ষ বলেন “আমি কলেজেরই একটি বিশেষ কাজে বিকাশ ভবনে এসেছি। সেই কারনেই চাবিটা আমার অফিস ঘরের দায়িত্বে থাকা কর্মীর কাছেই রেখে এসেছিলাম। তবে, তার জন্য সমস্যা কিছু হয় নি।’’ তিনি মনে করেন, কলেজের কর্মীদেরই একটা অংশ মিথ্যা রটচ্ছে।

কলেজের শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষাকর্মীদের একটা অংশ বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, কলেজে এত শিক্ষক থাকতে অধ্যক্ষ কেন তাঁর ঘরের চাবি অস্থায়ী কর্মীর কাছে রেখে গেলেন? যাঁর কাছে অধ্যক্ষ চাবি রেখে গিয়েছিলেন, সেই অরিন্দম রায় বলেন, “কলেজেরই একটা জরুরী কাজে আমাকে রানাঘাটে পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে পাঠিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। তাড়াহুড়োতে আমি কারোর কাছে চাবি রেখে যেতে পারিনি।’’ আর সুশোভনবাবু বলেন, ‘‘আমার বাবা মারা গিয়েছেন দিন কয়েক হল, সেই কারণে আমি কলেজে নিয়মিত আসতে পারছি না। কিন্তু কলেজ থেকে যখনই আমাকে ফোন করা হয়, তখনই গিয়ে আমি আলমারির তালা খুলে প্রশ্নপত্র বের করে দিয়েছি। ফলে পরীক্ষা নিতে কোন সমস্যা হয়নি।”

কলেজেরই শিক্ষকরা জানান, বিষয়টি অত সহজে মোটেই মেটেনি। সুশোভনবাবু এলেও তার আগেই অধ্যক্ষের ঘরের দরজার কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাঁর কাছে আলমারির চাবি ছিল। সেই চাবি দিয়ে আলমারি খুলে প্রশ্নপত্র বের করা হয়েছে।

তবে পরীক্ষা ভালভাবে মিটে যাওয়ায় খুশি সব পক্ষই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Question paper
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE