দুই কিলোমিটারের মধ্যে দু’দুটি পাম্প। তারপরেও পানীয় জলের সমস্যা লেগেই রয়েছে করিমপুরে। দুই পঞ্চায়েত —করিমপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েতে বাসিন্দাদের তেষ্টা মেটাতে ভরসা বলতে কেনা জল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নাটনা স্কুলপাড়া, নাটনা পশ্চিমপাড়া, লক্ষ্মীপাড়া, পাট্টাবুকার একাংশে, আনন্দপল্লি ও করিমপুর ২ পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণপল্লি, নতিডাঙা মোড় ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় ট্যাপ থেকে জল পড়ে না। কিছু জায়গায় ট্যাপগুলোই অকেজো। আবার কোথাও জল পড়লেও তা খুব সরু ফিতের মতো।
নাটনার স্কুলপাড়ার বাসিন্দা প্রীতি সাহা ও পশ্চিমপাড়ার রিক্তা রায় বলেন, “বহুদিন আগে ট্যাপ থেকে জল পড়ত। বছর চারেক আগে থেকে ট্যাপ অকেজো। বাড়ির টিউবয়েলের জল পানের অযোগ্য। তেষ্টার মেটাতে তাই কেনা জলই ভরসা।”
রামকৃষ্ণপল্লির আশিস প্রামাণিকের কথায়, “জল পড়ারও নির্দিষ্ট সময় নেই। কখনও জল পড়ে। কখনও পড়ে না। ফলে ওই জলের উপর ভরসা করতে না রেখে কেনা জলই খাই।’’
পানীয় জলের সমস্যার কথা মানছেন করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জ্যোৎস্না শর্মা। তিনি জানান, ১৯৮২ সালে ওই পাম্প তৈরি হয়। তবে কোনও রিজার্ভার তৈরি হয়নি। ফলে লোডশেডিং হলে জল সরবরাহ করা যায় না। সমস্যার কথা বহুবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।
করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান তারক সরখেল জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দেওয়া পানীয় জল এলাকার অনেক জায়গায় পৌঁছয় না। যে জল পৌঁছয় তা পানের অযোগ্য। পরিস্রুত জল সরবরাহের জন্য উন্নত মেশিন দরকার। সেকথা তাদের বারবার জানানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি।
সমস্যার সমাধানে এলাকায় দু’টি সজলধারা তৈরি করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। আরও দু’টি তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছে। তিনটি ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার মানুষকে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। যদিও সেটা পর্যাপ্ত নয়।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সহকারী বাস্তুকার দেবব্রত দে জানান, রাস্তার কাজ করার সময় অনেক সময় পাইপ ফেটে যায়। ফলে জল সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। সেই সমস্ত জায়গায় নতুন পাইপ বসানোর জন্য সরকারি অনুমোদন মিলেছে। টেন্ডারের কাজ শেষ হলে খুব শীঘ্রই পাইপ বসানোর কাজ শুরু হবে। দুই, এলাকায় প্রচুর বাড়িতে অবৈধ সংযোগ রয়েছে। তাদের পাম্প দিয়ে সেই জল বাড়ির রিজার্ভারে জমা করছে। এমন অসংখ্য অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। অবৈধ সংযোগ নেওয়ার ফলে অনেক মানুষ জল পাচ্ছেন না। সেই ব্যাপারে মানুষ সচেতন না হলে সমস্যা মিটবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy