Advertisement
১৮ জুন ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

বিধির চোখ রাঙানি ঘিরে অনিশ্চয়তা

মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পুরসভা কিংবা পুলিশের অনুমতি পাওয়া পুজো সংগঠকদের ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছন। কিন্তু সে টাকায় দর্শনার্থীদের স্যানিটাইজে়শন ব্যবস্থা কিংবা ফেসকভাররের আড়াল বিধি মেনে কতটা দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ওই পুজো কর্তারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিদ্যুৎ মৈত্র
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

করোনা-কালে শারোদৎসব বলে কথা, তাই উৎসবের দিনেও নিয়মবিধির ফতোয়া ঝুলিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যে নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে কি না তা পুলিশের নজরদারিতে থাকবে বলেই জানিয়েছে প্রশাসন। তবে, চেনা পুজোর অচেনা সেই নিয়মবিধি বাস্তবে কতটা মেনে চলা হবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে পুজো কর্তাদের কথায়।

মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পুরসভা কিংবা পুলিশের অনুমতি পাওয়া পুজো সংগঠকদের ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছন। কিন্তু সে টাকায় দর্শনার্থীদের স্যানিটাইজে়শন ব্যবস্থা কিংবা ফেসকভাররের আড়াল বিধি মেনে কতটা দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ওই পুজো কর্তারা। অনেকেই তাই খোলাখুলিই শুনিয়ে রাখছেন— পুজোর আনন্দ, মণ্ডপের বাহার, আলোর জৌলুশ দেখাতে গেলে সব নিয়ম মানা সম্ভব নয়।

পুজোর ক’দিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব করতে গেলে প্রাথমিক বাবে ২৩ দফা নিয়মের কথা জানিছিল জেলা পুলিশ। শুক্রবার, তাতে এক দফা ছাড় দিয়ে ২২ দফা নিয়ম বলবৎ করেছে। যা মেনে নিয়ো মণ্ডপ তৈরি করতে গিয়ে ‘অসুবিধা’ হবে বলে স্পষ্টই জানাচ্ছেন বেশ কয়েকটি পুজোর আয়োজকেরা। একই অসুবিধার কথা শোনা গিয়েছে মণ্ডপের ৫০০ মিটার দূর থেকে দর্শকদের স্যানিটাইজে়শন ব্যবস্থা নিশ্চিৎ করার প্রশ্নে।

বহরমপুরের আয়েশবাগের একটি সর্বজনীন পুজো কমিটির সম্পাদক রতনকান্তি পাল বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে মণ্ডপ তৈরি করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে চারের জায়গায় দু’দিকের বেশি খোলা রাখা যাচ্ছে না। স্থায়ী মন্দির ঘিরে পুজো, তোরণ না করা হলে ভাল লাগবে না। তখনই একটু বেনিয়ম হয়ত হবে।’’ একই অসুবিধার কথা শোনাচ্ছেন অভ‍্যূদয় ক্লাবের পুজো উদ‍্যোক্তারা। স্বর্ণময়ী আনাজ বাজারের মধ‍্যে এই পুজোর মণ্ডপের কর্তারা বলেন, ‘‘চার দিক খোলা রাখলে গরু-ছাগল ঢুকে পড়বে যে, আমরা দু’দিক খোলা রাখছি। তবে, দর্শনার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছি ভিড় এড়াতে।’’ গোরাবাজার জমিদার পাড়ার ইয়ুথ সেন্টার ক্লাবের কর্মকর্তা দেবাশিস দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘পাঁচশ মিটার দূর থেকে স‍্যানিটাইজেশনের ব‍্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু আমাদের পক্ষে তা মানা প্রায় অসম্ভব। আমরা তাই ক্লাবের খোলা মাঠে মণ্ডপ করছি।’’

হরিদাসমাটি এলাকায় রাস্তার ওপরেই ৩৬ বছর ধরে পুজো হচ্ছে শিল্পী সঙ্ঘের। ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ প্রভাত রজক বলেন, ‘‘একশো শতাংশ বিধি মেনে পুজো পরিচালনা করার চেষ্টা করছি। নিয়ম মানতে গিয়ে প্রবেশ প্রস্থানের রাস্তায় না হেঁটে মানুষ যাতে চলতি পথেপ্রতিমা দর্শন করতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। ফলে স‍্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে না।’’ মধুপুর এলাকায় বালার্ক সঙ্ঘের পক্ষে স্বরূপ সাহা বলেন, ‘‘বিধি মানতে গিয়ে থিমের পুজো শিকেয়। তবু মানতে তো হবেই।’’ স্বাস্থ্য বিধি মানতে গিয়ে ছাঁটাই হচ্ছে বাদ গিয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিসর্জনের শোভাযাত্রা। মধুপুর বাবুলবোনা পুজো কমিটির সভাপতি মিঠু জৈনের সেই সূত্রে সংযোজন, ‘‘সারা বছর মানুষ অপেক্ষায় থাকে পুজোর পাঁচটা দিনের। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিসর্জনের ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল হলেই ভাল হত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Durga Puja 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE