ভিড় ছিল তবে, দুর্গা পুজোয় পথ চলা দায় হয়েছে, এমনটা দেখেনি কৃষ্ণনগর। জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে, শহরের সেই অগম্য চেহারাটা সামনে এসে পড়ল। রাস্তা থেকেও নেই, ফুটপাথ হকারের দখলে।
বছর খানেক আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ফুটপাথ দখল মুক্ত করতে নেমেছিল কৃষ্ণনগর পুরসভা। আশ্বাস ছিল রাস্তাও আর বেদখল হতে দেবে না তারা। পুরপ্রধান থেকে ডাকসাইটে কাউন্সিলর, সে দিন রাস্তায় নেমে ছড়ি ঘুরিয়ে ছিলেন দেদার। পুরসভার মোড় থেকে ষষ্ঠীতলা পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের ফুটপাথ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছেল হকারদের। ভেঙে দেওয়া হয় একের পর এক অস্থায়ী দোকান।
সেই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে দখল মুক্ত ফুটপাথ দিয়ে যাতায়াতও করতে শুরু করেছিলেন সাধারণ মানুষ। দিন কয়েকের মধ্যে এই উচ্ছেদ নিয়ে দলীয় বিধায়কের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন পুর প্রতিনিধিরা। ফলে, খান কয়েক রাস্তা দখল মুক্ত করার পরেই রণে ভঙ্গ দিয়েছিলে পুরসভা। রাস্তা তাই ফের দখলে গিয়েছিল হকারদের। ক্রমে তা নেমে এসেছিল রাস্তাতেও। শহরের পুরনো চেহারা ফিরতে সময় লাগেনি।
এত দিন এ ভাবে চললেও ফের মানুষের মনে নতুন করে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। সামনেই জগদ্ধাত্রী পুজো। শহরের বুকে চারদিন ধরে দাপিয়ে বেড়াবে কয়েক লক্ষ মানুষ। সরু রাস্তা। তার উপর এ ভাবে ফুটপাথ ও রাস্তা দখল হয়ে থাকলে যানবাহনের পাশাপাশি মানুষেরও পথ চলা কঠিন হয়ে পড়বে। অন্তত অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তারা এটাই বুঝেছেন। আর সেই কারণে শহরের মানুষ চাইছেন অন্তত উৎসবের দিনগুলিতে দখল মুক্ত থাক ফুটপাথ। কিন্তু এখানে শুরু পুরসভা ও বিধায়কের চাপানউতোর। পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা জানিয়ে দিয়েছেন, বিধায়ক আপত্তি জানানোয় তারা সরে এসেছিলেন। অসীমবাবু বলেন, “কি করব? বিধায়ক আপত্তি করে বসে আছেন। সেই কারণে আমরা নতুন পদক্ষেপ করতে পারছি না।” কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রর বিধায়ক তৃণমূলেরই অবনীমোহন জোয়ারদার বলছেন, “আমি তো দখল মুক্ত করার বিষয়ে আপত্তি করিনি। বলেছিলাম, রাস্তার ধারে দরিদ্র ব্যবসায়ীদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিতে হবে।”
তাহলে কি শহর পুরনো চেহারায় থাকবে? অবনীবাবু বলেন, ‘‘বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভেবেছি। থানার সামনে ফাঁকা জায়গায় তাঁদের বসার ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনায় বসব।” কিন্তু কবে? এক বাসিন্দার কথায়, “কোথাও তো রাজনীতি থেকে দূরে থাকা উচিত, তা বুঝল না রাজনীতির কারবারিরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy