দুই শরিকের বিদ্রোহে মুর্শিদাবাদ জেলায় কি সঙ্কটে পড়তে চলেছে বামফ্রন্টের ঐক্য? ফ্রন্টের বৈঠকে এই অপ্রিয় প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলেই দীর্ঘ দিন এই বৈঠক ডাকছে না সিপিএম—এমন অভিযোগ শরিক নেতাদেরও।
বামফ্রন্টের শেষ বৈঠক হয়েছে জেলায় নির্বাচনের আগে সেই মার্চ মাসে। আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারা সেই নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, দ্রুত জেলায় বামফ্রন্টের বৈঠক করতে হবে।
আরএসপি ও ফরয়োর্ড ব্লকের দুই জেলা সম্পাদক স্পষ্টই বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে থেকে সিপিএম যে ভাবে বিধানসভা নির্বাচনে এ জেলায় বাম শরিকদের বিরুদ্ধাচরণ করেছে, তাতে সিপিএমের সঙ্গে থেকে এ জেলায় আর আন্দোলন করা সম্ভব নয়।
বিধানসভা নির্বাচনে ৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েও আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লকের শোচনীয় হারের জন্য দায়ি করেছেন সিপিএমকে। তারপর থেকে দুই শরিকের সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক এ জেলায় দাঁড়িয়েছে সাপে নেউলে। বামেদের কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন না আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লকের কোনও নেতা।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক বিভাস চক্রবর্তী বলেন, “আগে কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়তে হবে সিপিএমকে। তা না হলে ফরওয়ার্ড ব্লক সিপিএমের সঙ্গে থাকবে না। এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের। জোট বা সমঝোতা কোনওটাতেই কংগ্রেসের সঙ্গে থাকা চলবে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সিপিএম যদি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার কথা ভাবে তবে ফব আলাদা প্রার্থী দিয়ে লড়বে এ জেলায়। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।”
আরএসপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “সিপিএম বামপন্থাকে অন্তর্জলী যাত্রার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু গত বিধানসভা নির্বাচনেই নয়, এ জেলায় বাম শরিকদের আগেও এই ভাবেই অপদস্থ করার চেষ্টা করেছে সিপিএম। এটা আর মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এখন বিকল্প চিন্তার পথে এগোচ্ছি। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সিপিএমকে ছাড়াই চলব আমরা। যত ভয়ঙ্কর পরিণতিই হোক না কেন, কংগ্রেসকে ছাড়তে হবে সিপিএমকে। এ জেলায় দলের নিচুতলার কর্মীরা এটাই চান।”
দুই শরিকের এই জেহাদ নিয়ে অবশ্য সে ভাবে মুখ খুলতে চাননি সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, “খুব শীঘ্র জেলায় বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকব। সেখানে ওই দুই শরিকের নেতারাও থাকবেন। সেই বৈঠকেই তাদের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হবে।” দুই শরিকের ক্ষোভ নিয়ে এই মুহূর্তে সিপিএম প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া দেবে না বলে জানিয়ে দেন মৃগাঙ্কবাবু।
যা শুনে দুই শরিক নেতাই জানিয়ে দেন, ‘‘বৈঠক ডাকুক। তখন যা বলার তা বলব। মুখ বুজে থাকব না এটা বলতে পারি।’’
দুই শরিকের সঙ্গে সিপিএমের এই বিবাদকে নেহাতই তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করলেও রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হক বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা জোট আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বহাল থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। বামেদের সব শরিককেই এটা বুঝতে হবে যে তৃণমূলকে রুখতে জোট দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy