হবিবপুর পঞ্চায়েত অফিসের শৌচালয়ের পাশে পড়ে ব্যাটারি চালিত গাড়ি। ছবি:সুদেব দাস।
নদিয়া জেলায় মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন ভাগের একভাগ পঞ্চায়েতেও পুরোদমে চালু করা যায়নি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপক প্রকল্প। অথচ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সাড়ে তিন কোটি টাকায় ১৭৭টি ব্যাটারি চালিত তিন চাকার গাড়ি কিনে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বণ্টন করে ফেলেছে জেলা পরিষদ। প্রকল্প যেখানে চালুই করা যায়নি, সেখানে বাড়ি বাড়ি কঠিন বর্জ্য সংগ্রহের জন্য ওই গাড়ির প্রয়োজনীয়তা কোথায়? এই প্রশ্নই এখন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে। বেশিরভাগ পঞ্চায়েতেই পড়ে নষ্ট হচ্ছে ওই গাড়ি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর বেশ কয়েক দফায় দরপত্র ডেকে ব্যাটারি চালিত তিন চাকার গাড়ি কেনা হয়েছিল। এক একটি গাড়ির জন্য খরচ হয় প্রায় ২ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। জেলায় মোট ১৮ ব্লকের ১৮৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তার মধ্যে গত বছর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১৮টি পঞ্চায়েতে পুরোদমে চালু করা হয়েছিল কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপক প্রকল্প। তবে অধিকাংশ পঞ্চায়েতেই জমি জটের কারণে প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, পুরসভাগুলিতে এই ধরনের প্রকল্প চালু থাকলেও গ্রামে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। অধিকাংশ জায়গায় স্তূপীকৃত আবর্জনা মাঝেমধ্যেই পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে গ্রামাঞ্চলে বায়ুদূষণও কয়েক গুণ বেড়েছে। সূত্রের খবর, প্রথম পর্বে মোটামুটি পাঁচ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে, এমন গ্রাম পঞ্চায়েত বেছে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ হাজার জনসংখ্যার জন্য মাথাপিছু ৬০ টাকা করে ধরে নিয়ে বিস্তারিত প্রকল্প তথ্য (ডিপিআর) তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ টাকা জেলা পরিষদের পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে খরচ করা হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি সমস্যা মেটাতে দুই বা তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য একটি নির্দিষ্ট জমি চিহ্নিত করে প্রকল্প তৈরির কথা আগেই ঘোষণা করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। যেমন রানাঘাট-১ ব্লকের হবিবপুর, রামনগর-২ ও তারাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য চূর্ণী নদীর পাশে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপক প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছিল। বাসিন্দাদের বাধায় মাঝপথেই থমকে গিয়েছে ওই প্রকল্পের কাজ। সম্প্রতি জেলাশাসক এস অরুন প্রসাদ এই প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
কাজ কবে শেষ হবে? কবে জেলা পরিষদের দেওয়া ওই ব্যাটারি চালিত গাড়ি প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত হবে সে সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য দিতে পারেননি প্রশাসনের আধিকারিকরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনুপকুমার দত্ত বলেন, "কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপক প্রকল্প চালু রয়েছে ও কাজ চলছে এমন পঞ্চায়েতের সংখ্যা ১০২। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই জেলা পরিষদ থেকে দেওয়া ওই গাড়ি পঞ্চায়েতগুলি ব্যবহার করতে পারবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy