Advertisement
১০ মে ২০২৪

রোগীরা কী খায়, দেখলেন কর্তারা

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস এ দিন গিয়ে দেখেন, ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া চাদর-কম্বলের পরিবর্তে রোগীদের বাড়ি থেকে আনা কাঁথা-চাদর ব্যবহার করতে হচ্ছে।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২২
Share: Save:

হাসপাতালে যত্রতত্র আবর্জনা। খাবারের ন্যূনতম গুণগত মান নেই। চিকিৎসা পরিষেবার হালও খারাপ। বুধবার কান্দি মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে এই নিয়ে তাঁদের ক্ষোভের কথা জানালেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস এ দিন গিয়ে দেখেন, ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া চাদর-কম্বলের পরিবর্তে রোগীদের বাড়ি থেকে আনা কাঁথা-চাদর ব্যবহার করতে হচ্ছে। কেন এমন অবস্থা? হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্র মান্ডি বলেন, “স্যার, রোগীরা চাইলে তবেই তাদের দেওয়া হয়। না চাইতে চাদর বা কম্বল দিলে অনেকে বাড়ি যাওয়ার সময়ে সেটা ব্যাগে ভরে নিয়ে চলে যায়।” শুনে চড়া স্বরে নিরুপম বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই তো সে ব্যাপারে নজরদারি চালাতে হবে!”

পাশেই ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস। তিনি বলেন, “গরিব মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন মনোভাবেই বোধা যাচ্ছে, চিকিৎসা কেমন হয়।” এর পরেই হাসপাতালের রান্নাঘরে গিয়ে রোগীদের খাবারের মান খতিয়ে দেখেন কর্তারা। সভাধিপতি নিজে খাবার চেখেও দেখেন। তার পরেই তিনি বলেন, “রোগী পিছু ৫০ গ্রাম করে মাছের বরাদ্দ থাকলেও ২০-২৫ গ্রামের বেশি দেওয়া হচ্ছে না। সঙ্গে জলের মতো ডাল, তরকারিও খুবই খারাপ। এ ভাবে চলতে পারে না।”

পরে ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁরা রোগীদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন। দুই কর্তাকে নাগালে পেয়ে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা অনুযোগ করেন, “এখানে কোনও কিছু নিয়েই কিছু বলা চলে না। ডাক্তার না দেখলে যদি কিছু বলা হয়, তা হলে রক্তচক্ষু দেখায়। বলে, অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেবে। ভয়ে আমরা আর কিছু বলতে পারি না।”

পরেশ দাস নামে এক আত্মীয় অভিযোগ করেন, “হাসপাতালে নিরাপত্তার কোনও বালাই নেই। যখন তখন বাইরের লোক ভিতরে চলে আসছে। হাসপাতালের বেডে বসে জমিয়ে গল্পও করছে। এটা বন্ধ করার ব্যবস্থা করুণ স্যার।” শুনে নিরুপম বলেন, “এখানে নিরাপত্তা রক্ষীর অভাব আছে। শীঘ্রই তা বাড়ানো হবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।”

ওই হাসপাতালের পরে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালও পরিদর্শন করেন দুই কর্তা। বৈদ্যনাথের দাবি, “সরকারি স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবার কোনও খামতি নেই। অথচ কান্দি মহকুমা হাসপাতাল শুধু নয়, প্রায় সমস্ত হাসপাতালেই পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে।’’ তিনি জানান, আগামী ২৪ নভেম্বর কান্দি মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিও এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। পরিষেবা কী করে উন্নত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kandi Hospital Inspection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE