Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ভাঙনে ধসল ঘর, ইদ ম্লান মহেশপুরে

আগের দিন বিকেলেই ধসে গিয়েছিল পাড়ের গার্ডওয়াল-সহ প্রায় ৫০ ফুট পাকা রাস্তা। দুলে উঠেছিল পাড়ের বাড়িগুলো। কোনও রকমে হুড়মুড় করে বেরিয়ে এসেছিলেন বাসিন্দারা। দেখতে-দেখতে চোখের সামনেই তলিয়ে গেল ইন্তেকাব আলমের বাড়ি। জলে পড়ে না গেলেও ঝুলে রইল আরও অন্তত আটটি বাড়ি।

গঙ্গার গ্রাসে। — নিজস্ব চিত্র

গঙ্গার গ্রাসে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৯
Share: Save:

আগের দিন বিকেলেই ধসে গিয়েছিল পাড়ের গার্ডওয়াল-সহ প্রায় ৫০ ফুট পাকা রাস্তা।

দুলে উঠেছিল পাড়ের বাড়িগুলো। কোনও রকমে হুড়মুড় করে বেরিয়ে এসেছিলেন বাসিন্দারা। দেখতে-দেখতে চোখের সামনেই তলিয়ে গেল ইন্তেকাব আলমের বাড়ি। জলে পড়ে না গেলেও ঝুলে রইল আরও অন্তত আটটি বাড়ি। পরের দিন ইদ এল মহেশপুরে। বাঁশের ঝাড় ও চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে পাঁচ দিন আগে কোনও রকমে ঠেকানো হয়েছিল গঙ্গার ভাঙনকে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে ধস নামে বাগমারি নদীতে। বুধবার কোনও রকমে ইদের নমাজ সেরে এসে বাড়ি থেকে মালপত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন বিপন্ন পরিবারের লোকজন। রান্না ছেড়ে তাতে হাত লাগিয়েছেন বাড়ির মেয়েরাও।

ফরাক্কার মহেশপুর গ্রামটি আসলে পড়েছে জো়ড়া নদীর ফাঁসে। উত্তর পূর্বে গ্রাম ছুঁয়ে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা। পূর্ব থেকে দক্ষিণে গিয়েছে বাগমারি নদী। ঝাড়খণ্ড থেকে বাঁশলই সুতিতে গিয়ে মিশেছে মাসনা নদীতে। তা আবার সমশেরগঞ্জ হয়ে পড়েছে বাগমারিতে। তার পরে মহেশপুরের কোল ঘেঁষে গিয়ে পড়েছে গঙ্গায়। গ্রামের কামরুজ্জামান বলেন, “জোড়া নদী ঘিরেছে আমাদের। জল বাড়ুক বা কমুক, সবেতেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা।’’ ফরাক্কা থেকে গঙ্গায় বাড়তি জল ছাড়ায় মাসখানেক আগে ভেসে গিয়েছিল গ্রাম। জল কমতেই পাঁচ দিন আগে গঙ্গার পাড় জুড়ে শুরু হয় ভাঙন। আধ ঘণ্টার মধ্যে ধসে পড়ে পাড়ের পাঁচটি বাড়ি। প্রাণ হাতে করে তড়িঘড়ি ঘুম থেকে উঠে পালিয়ে বাঁচেন বাসিন্দারা। চোখের সামনেই সব কিছু নিয়ে জলে পড়ে বাড়িগুলো। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখনও ঝুলে থাকা আটটি বাড়ির বাসিন্দারা অন্যত্র সরে গিয়েছেন।

মাস দুই আগেও মহেশপুরে একই ভাবে জলের টানে ভাঙন শুরু হওয়ায় ১৪টি বাড়ি ধসে পড়েছিল। পাঁচ দিন ফের ধস নামার পরে বাঁশের ঝাড় আর চাটাইয়ের বেড়ার ঘেরাটোপ দিয়ে তা আটকানো হয়েছিল। তাতে সামলানো গেল না। সেচ দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের ব্যাখ্যা, শুক্রবার সারা রাত ওই এলাকায় প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে। ভিজে মাটি সহজেই
ধসে যাচ্ছে।

গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ বিভাগের রঘুনাথগঞ্জ ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গঙ্গায় জল ছাড়ার পরিমাণ হঠাৎ অনেকটাই কমে গিয়েছে। তার ফলে মঙ্গলবার ভোর থেকে মহেশপুরে গঙ্গায় প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়। আপাতত বাঁশের ঝাড় ও চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে কোনও রকমে পাড় ধরে রাখা হয়েছে। কত দিন রাখা যাবে তা বলা মুশকিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

erosion banks river
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE