Advertisement
১৬ মে ২০২৪

পুকুর আলো করে ফুটে পদ্ম, দাম মিলবে তো

বিশ্বকর্মা পুজোয় কমবেশি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে চাহিদা হয় দুর্গাপুজোয়। বাড়তি দু’পয়সা হাতে আসে। আর এ বারে ফলনও বেশ ভাল। তাই ভাল বাজারের আশা করছেন মুর্শিদাবাদের পদ্মচাষিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

বিশ্বকর্মা পুজোয় কমবেশি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে চাহিদা হয় দুর্গাপুজোয়। বাড়তি দু’পয়সা হাতে আসে। আর এ বারে ফলনও বেশ ভাল। তাই ভাল বাজারের আশা করছেন মুর্শিদাবাদের পদ্মচাষিরা।

জঙ্গিপুরের রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের জামুয়ার, জরুর, সেন্ডা, মণ্ডলপুর, জামুয়ার, সিদ্ধিকালী, বাড়ালা-সহ প্রায় ১২টি গ্রামের অন্তত ৩৫টি পুকুরে এ বার পদ্ম চাষ হয়েছে। সাগরদিঘির বন্যেশ্বর, মোড়গ্রাম, খড়গ্রাম, কান্দিতেও কেউ কেউ পদ্মচাষ করছেন। পদ্ম হয়েছেও অনেক। তাই আশায় বুক বাঁধছেন চাষিরা।

দীর্ঘদিন ধরে পদ্মচাষ করে আসছেন জঙ্গিপুরের মণ্ডলপুর গ্রামের বাসিন্দা দীপচাঁদ ফুলমালি। এখন চাষ করেন তাঁর দুই ছেলে। তিনি জানান, আগে গ্রামের পুকুর পেতে অসুবিধা হত না। কিন্তু এখন মাছচাষের জন্য অনেকে পুকুর দিতে চান না। তবে তিনি এ বছর ১০টি পুকুরে পদ্ম চাষ করেছেন। প্রথম দিকে বৃষ্টির অভাবে পোকা ধরেছিল পদ্মে। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে ভাল বৃষ্টি হওয়ায় পোকার আক্রমণ কমেছে। পদ্মও ফলেছে ভালই। তিনি বলেন, ‘‘আশা করছি, এ বছর ভাল বিক্রিবাটা হবে।’’

চৈত্রের শেষ কার্তিক পর্যন্ত আট মাস ধরে প্রায় ৪৫টি পরিবার পদ্ম আঁকড়ে বেঁচে আছেন। সব পুজোপার্বণে পদ্ম লাগে। তাই চাহিদাও সারাবছর কমবেশি রয়েছে। তবে সবচেয়ে চাহিদা হয় দুর্গাপুজোয়। তাই আগে থেকে ফুল তুলে হিমঘরে রাখার কথা চিন্তা করছেন সেন্ডারের নারায়ণ ফুলমালি। তিনি জানান, নিজের পুকুর ছাড়াও জামুয়ার ও পাশেই বীরভুমের জাজিগ্রামে পাঁচটি পুকুর লিজে নিয়ে পদ্ম চাষ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর বেশি পুকুরে পদ্মচাষ হয়নি। ফলে পুজোর সময় পদ্মের ঘাটতি দেখা যাবে। তাই ঠিক করেছি পাশেই নলহাটি হিমঘরে হাজার দুই পদ্ম তুলে রাখব।’’

তবে পদ্ম মজুত করার জন্য যদি হিমঘরের ব্যবস্থা থাকত তা হলে আরও বাড়তি দু’পয়সার মুখ দেখতেন বলে জানান, পদ্মচাষিরা।

পদ্মচাষি বিষ্ণু ফুলমালি, অলক ফুলমালি, জিষ্ণু ফুলমালরা জানান, বাজারে পদ্ম প্রতি দাম ৫-৬ টাকা হলেও পাইকারি হিসেবে আমরা দেড় থেকে দু’টাকার বেশি পান না। এ বারে পুকুরের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। কিন্তু পদ্মের দাম মিলছে না। পদ্ম প্রতি দাম সেই দেড় থেকে দু’টাকা। তাঁরা বলেন, ‘‘যদি হিমঘরের ব্যবস্থা থাকত তবে আরও দু’টো বাড়তি পয়সা পেতাম।’’

উদ্যান পালন দফতরের জেলা আধিকারিক গৌতম রায় জানান, জেলায় মুর্শিদাবাদে পদ্ম ফুল রাখার মতো হিমঘর নেই। বহরমপুরের ভাকুরিতে ৫ মেট্রিক টন করে দুই প্রকোষ্ঠের একটি হিমঘর আছে। সেখানে পদ্ম রাখা যেতে পারে। কিন্তু রাখার কিছু পদ্ধতি রয়েছে। প্রতিটি ফুল প্লাস্টিকে ভরে ক্রেটে রাখা যায় তা হলে মাস খানেক পর্যন্ত রাখা যাবে। উদ্যান পালন দফতরের এক কর্তা বলেন, “মালদহের একটি হিমঘরে ৮০ ক্রেট মতো পদ্ম রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু চাষিদের কাছ থেকে সস্তায় কিনে নিয়ে মহাজনেরা সে পদ্ম হিমঘরে রাখেন। তাতে মহাজনের লাভ হলেও চাষিদের বরাত খোলে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga puja Lotus flower Pond
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE