নশিপুর রেল সেতু। নিজস্ব চিত্র।
নশিপুর রেল সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করতে চায় রেল মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুর রোড রেল স্টেশনে এক অনুষ্ঠানে এসে এ কথা জানিয়ে দিলেন পূর্বরেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ আরোরা।
তাঁর কথায়, “নশিপুর রেল সেতু বানাতে অত্যন্ত তৎপর রেল মন্ত্রক। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের বিক্ষোভের জন্য সে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন যদি তাঁরা রাজি থাকেন তাহলে রেল সে সেতু বানাবে না কেন, নিশ্চয় বানাবে। আমরা তৈরি।”
এক সপ্তাহ আগে বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভাতেও নশিপুর রেলসেতু চালুর দাবি ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী জেলা শাসককে বিষয়টি দেখতে নির্দেশ দিয়ে যান। সেতুটির ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হলেও ১১ বছর ধরে আটকে এক শতাংশের কাজ।
রাজ্য সরকার নশিপুর রেল সেতুর জন্য রেল মন্ত্রককে প্রয়োজনীয় জমি হস্তান্তর করে দিয়েছে চার বছর আগে। রেল মন্ত্রক জমিদাতা পরিবারের ১০৫ জনকে চাকরি দিতে সম্মত হয়ে তাঁদের কাছ থেকে আবেদন পত্রও জমা নিয়েছেন। প্রকল্পের জমিদাতারা প্রথম দিকে এ নিয়ে বিক্ষোভ জানালেও বর্তমানে এ নিয়ে তাঁদের আর কোনও ক্ষোভ নেই। তারপরেও নশিপুর রেল সেতুর কাজ শুরু না হওয়ায় রেলের গাফিলতিকেই বার বার দায়ী করছেন মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে যাত্রী সমিতি। বহু বার এ নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছে তারা।
রেল মন্ত্রক থেকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জমিদাতাদের বিক্ষোভের কারণেই নশিপুর রেলসেতুর কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবারও নশিপুর রেল সেতুর কাজ আটকে থাকার পিছনে একই কারণ দেখিয়েছেন পূর্বরেলের জেনারেল ম্যানেজারও।
গত ২০০৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই রেল সেতুর শিলান্যাস করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। পরে ২০০৬ সালে সেতু নির্মাণের কাজও শুরু হয়। কাজ শুরুর চার বছরের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে ২০১০ সালের এপ্রিলে সেতুর উদ্বোধন হবে বলেও রেল মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে আজিমগঞ্জের দিকে দুটি মৌজা চর মহিমাপুর ও মাহিনগর দিয়াড়ে মোট সাড়ে সাত একর জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। তার জেরেই ১৭ বছর ধরে আটকে রয়েছে নশিপুর রেলসেতুর কাজ।
জমিদাতাদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফায় বৈঠকও হয় জেলা প্রশাসন ও রেল অফিসারদের। শেষ পর্যন্ত ‘জমির প্লট পিছু এক জনকে’ চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় রেলওয়ে বোর্ড। তার পরেই জমিদাতারা জমি দিতে রাজি হন। এবং বিক্ষোভ থেকে সরে আসেন ।
ইংরেজ আমলে হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনের মধ্যে এই নদীপথে রেল সংযোগ ছিল। কিন্তু ওই সেতু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রেল সংযোগও বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে নশিপুরে ভাগীরথীর উপর ৭৫৮ মিটার দীর্ঘ এই রেল সেতুর কাজ শেষ হলে নিউ জলপাইগুড়ির সঙ্গে শিয়ালদহের দূরত্ব রেলপথে ২১ কিলোমিটার কমে যাবে।
জেওএম এদিন বলেন, “এই রেল পথে তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস বন্ধ রয়েছে রেলওয়ে বোর্ডের নির্দেশে। আমরা ইতিমধ্যেই সুপারিশ করে পাঠিয়েছি তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুনরায় চালু করার জন্য। তাদের অনুমতি এলেই তিস্তা চালু করা হবে।”
এ দিন জেনারেল ম্যানেজারের রেলপথের যাবতীয় সমস্যার কথা জানাতে হাজির হন দুই বিধায়ক জাকির হোসেন ও আমিরুল ইসলাম সহ অনেকেই। একাধিক দাবির কথা জানান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy