পাটকাঠির বেড়ার ফাঁক দিয়ে স্পষ্ট দেখা যায় বর্ডার রোডটা। হাত দশেক দূরের সেই রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছে বহু দূর। সেই রাস্তা দিয়েই বাড়ি ফিরছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী খুকুলি খাতুন। সে দিন স্কুলের টেস্ট দিয়ে সে প্রায় বাড়ির কাছাকাছি চলেও এসেছিল। ঠিক তখনই গুলি ছিটকে এসে বিঁধেছিল তার পেটে। রাস্তার উপরেই লুটিয়ে পড়েছিল মেয়ে।
২০০৯ সালের সেই ঘটনা আজও ভুলতে পারেনি চাপড়া সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারের গ্রাম হাটখোলা। শনিবার হাটখোলার একেবারে লাগোয়া গ্রাম মজফ্ফরের বাসিন্দা সফিকুলের দেহ মিলেছে এলাঙ্গি এলাকায়। অভিযোগ, বিএসএফ তাঁকে পিটিয়ে খুন করেছে। এই ঘটনা সীমান্তের ওই এলাকায় ফের উসকে দিল খুকুলির স্মৃতি।
রান্না করার সময় খুকুলির মা বিলকিস বিবির মাঝেমধ্যেই চোখ চলে যায় বর্ডারের রাস্তায়। এখনও তিনি স্পষ্ট দেখতে পান, চারপাশে প্রচণ্ড কোলাহল। আচমকা গুলির শব্দ। খুকুলি রাস্তার উপরে পড়ে রয়েছে। রক্তে ভিজে গিয়েছে স্কুলের পোশাক, বর্ডার রোড। সবাই মেয়েটাকে ধরাধরি করে প্রথমে চাপড়া ও পরে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে গেল। ফিরে এল খুকুলির নিথর দেহ!
আপন মনেই বিড়বিড় করেন বিলকিস, ‘‘সব তছনছ হয়ে গেল। মেয়েটার শোকে ওর বাবাও সেই থেকে চুপ মেরে গেল। আর কারও সঙ্গে কথাও বলে না।”
গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পাচারকারী ও বিএসএফের মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় খুকুলি দুই পক্ষের মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়। সে বারেও বিএসএফের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়ছিল। তদন্তও শুরু করেছেল চাপড়া থানার পুলিশ। বিলকিস বলেন, ‘‘কী হবে দাদা, এ সব লিখে! তখনও তো শহর থেকে তো কত বাবুরা এলেন, কাগজের লোকজন এলেন।’’ হতাশ বিলকিস জানতে চান, ‘‘সত্যিই কি মেয়েটা কোনও দিন সুবিচার পাবে না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy