ভোট-প্রচার: জঙ্গিপুরের কংগ্রেস প্রার্থীর। নিজস্ব চিত্র
বালিয়াঘাটির সড়ক দিয়ে বেরিয়ে গেল ছোট্ট মিছিলটা। বাইকের শব্দ ও মিছিলের শ্লোগান কোনোটাই যেন কানে গেল না তাদের। জনা দশেক মহিলা পড়ন্ত বেলায় কুলো হাতে ব্যস্ত বিড়িতে সুতো পাকাতে।
এক জন শুধু নিচু গলায় জানতে চাইল, “কারা গেল রে, যত্তসব ভূতের ভোট!’’ উত্তরটা এল তার চেয়েও নিচু স্বরে “বিড়ি পার্টি”। শুনেও যেন শুনল না কেউ। তারস্বরে আওয়াজ করে মিছিলটা চলে গেল সাজুর মোড়ের পথে। ভোটের তাপে কোনও আঁচ নেই বিড়ি মহল্লায়।
অরঙ্গাবাদ ও সুতি, পা দিলে যেন অন্য আঁচে পা পুড়ছে। এই দুই বিড়ি শহরের কয়েক লক্ষ শ্রমিকের দাবি, হাজার প্রতি ১৫২ টাকা মজুরির চুক্তি স্বাক্ষরের পরও সে মজুরি এখনও হাতে পাচ্ছেন না তাঁরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সঙ্গে, হপ্তায় সাত দিনই কাজের চাপ কমে এখন চার দিনে। আয় প্রায় অর্ধেক। এই অবস্থায় ভোট তাঁদের কাছে নিছক বিড়ম্বনা।
জঙ্গিপুর লোকসভার প্রায় ১৬ লক্ষ ভোটারের মধ্যে ৬ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের বাস অরঙ্গাবাদ ও সুতি এলাকায়। এমনকি রঘুনাথগঞ্জ, লালগোলাতেও বড় সংখ্যার ভোটার পেশায় বিড়ি শ্রমিক। তাই জঙ্গিপুর লোকসভায় সব দলেরই ভোট ভাগ্যের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরা। তবে প্রার্থীরা প্রচারে নেমে পড়েছেন বিড়ি মহল্লাতে। দেওয়াল লিখন চলছে পুরোদমে। কিন্তু ভোট নিয়ে কোনও হেলদোল নজরে পড়ছে না বিড়ি শ্রমিকদের মধ্যে।
ভোটের চেয়ে এখন শ্রমিকদের কাছে কাজ ও মজুরি পাওয়াটাই আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৭২ সালে যেখানে ৬৫ শতাংশ বিড়ি শ্রমিক ভোট কেন্দ্রে গেছেন, সেখানে ২০০৯ সালে ভোট দানের হার বেড়ে হয়েছিল ৮৬ শতাংশ। গত বিধানসভা নির্বাচনেও সুতিতে বিড়ি মহল্লায় পুরুষদের চেয়েও মহিলারা ভোট দিয়েছেন বেশি, ৮৬.২৫ শতাংশ। শ্রমিকেরা কখনও ভরসা করেছেন বামেদের উপর, কখনওবা কংগ্রেসের উপর। কিন্তু দুর্ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি তাঁদের। ন্যুনতম সরকারি মজুরির ধুয়ো উঠেছে বার বার সব নির্বাচনেই। কিন্তু আজও জোটেনি তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy