Advertisement
০১ ডিসেম্বর ২০২৩
Sagardighi

সংখ্যালঘু ভোট বাঁচাতে নেতৃত্বে বদল? জল্পনা

ফলে তৃণমূলের উত্তর ও দক্ষিণ নদিয়া জেলা নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন যে কাল, শুক্রবার কলকাতায় ডাকা বৈঠকে নেত্রী এই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিতে পারেন।

নেতৃত্বে বদল আনতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

নেতৃত্বে বদল আনতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। — ফাইল চিত্র।

সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১০:১৩
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলনেত্রীর ডাকা বৈঠকে সংখ্যালঘু এলাকায় নেতৃত্বে কোনও রদবদল হয় কি না তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের কাছ থেকে বাম-কংগ্রেস জোটের দিকে সংখ্যালঘু ভোট সরে যাওয়ার বিষয়টি সামনে আসতেই নদিয়ার নেতার নড়েচড়ে বসেছেন। কারণ বিশেষ করে উত্তর নদিয়ায় দলের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করে সংখ্যালঘু ভোটারদের উপর। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই ভোট ধরে রাখতে না পারলে যে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তা বিলক্ষণ জানেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব।

ফলে তৃণমূলের উত্তর ও দক্ষিণ নদিয়া জেলা নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন যে কাল, শুক্রবার কলকাতায় ডাকা বৈঠকে নেত্রী এই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিতে পারেন। এমনকি প্রয়োজনে তিনি কড়া অবস্থান নিয়ে নেতৃত্বে বদল করার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে সংখ্যালঘু এলাকার অনেক নেতাই চাপে আছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে সম্প্রতি তেহট্ট এলাকায় পর পর দুটো সমবায় সমিতির নির্বাচনে সিপিএমের কাছে তৃণমূলের লেজে-গোবরে অবস্থা হওয়াও অশনি-সঙ্কত বলে অনেকে মনে করছেন।

শুক্রবার অন্য জেলার পাশাপাশি নদিয়ার দুই সাংগঠনিক জেলার নেতাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি থেকে শুরু করে দলের অন্দরের কোন্দল নিয়ে কেউ-কেউ নেত্রীর কোপের মুখে পড়তে পারেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন থাকছে সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে। দক্ষিণ নদিয়ার মতুয়া-উদ্বাস্তু বলয়ে বিজেপির ধারাবাহিক সাফল্য তো আছেই, উত্তরে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কেও ধস নামার আশঙ্কায় দল বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছে।

এর সঙ্গে রয়েছে গোটা জেলা জুড়ে দলে প্রবল গোষ্ঠী কোন্দল যা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নেতৃত্বকে। কোনও কোনও জায়গায় রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেও পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না। জেলা সফরে এসে বার বার এই নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে গিয়েছেন মমতা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি এ নিয়ে কড়া অবস্থান নিতে পারেন বলে দলে অনেকেরই ধারণা। সে ক্ষেত্রে কারা নেত্রীর কোপে পড়বেন তা নিয়েও দলের অন্দরে হিসাব কষা শুরু হয়ে গিয়েছে।

নদিয়া দক্ষিণে গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের শোচনীয় পরাজয়ের পিছনেও গোষ্ঠী কোন্দল বড় কারণ বলে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ধারণা। সম্প্রতি ব্লক ও অঞ্চল নেতৃত্বের নাম ঘোষণা হতেই বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। এমনকি ব্লক কমিটি থেকেও দলে-দলে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। উত্তরে আবার প্রায় সর্বত্রই দল আড়াআড়ি ভাগ হয়ে আছে। কয়েকটি জায়গায় তা মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে, যা একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের প্রভাবিত করছে।

এই পরিস্থিতিতে দুই সাংগঠনিক জেলার মূল সংগঠনের পাশাপাশি যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব ও বিধায়কদের বৈঠকে ডেকে নেত্রী কী বলেন, আপাতত তা নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে। ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি যুব সংগঠনের দায়িত্বেই চলছে। এই কর্মসূচির বাস্তবায়ন নিয়ে মমতার প্রশ্নের মোকাবিলা করতে তথ্য গুছিয়ে রাখছেন যুব নেতৃত্ব।

জেলা নেতাদের অনেকের মতেই, ওই কর্মসূচি করতে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার বা সরকরি পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু সমস্যার কথা উঠে আসছে। নেত্রী চাইলে তাঁরা সেগুলি জানাবেন।

বুধবার তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে আমাদের ডেকেছেন। আগামী দিনের লড়াইের ক্ষেত্রে তিনি যা নির্দেশ দেবেন, ফিরে এসে সেটাই সকলে মিলে বাস্তবায়িত করতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE