Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Berhampore

জেলায় আম বিকোচ্ছে জলের দরে

মুর্শিদাবাদ জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২৩-২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বরাবরই আম চাষ হয়।

জলের দরে বিক্রি হচ্ছে আম।

জলের দরে বিক্রি হচ্ছে আম। — ফাইল চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৩ ০৯:৩৬
Share: Save:

বিপুল ফলনের জেরে নবাবদের জেলা মুর্শিদাবাদে আম এ বার এক রকম জলের দরে বিকোচ্ছে। জেলার আম চাষিরা জানাচ্ছেন, কাঁচা আম পাইকারি ১১-১২ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। গাছ পাকা আমের পাইকারি দাম ৫-৮ টাকা কেজি। তবে কয়েক হাত ঘুরে সে সব আম খুচরো বাজারে ১৫-২০-২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২৩-২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বরাবরই আম চাষ হয়। এ বছরেও জেলা জুড়ে প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। আর সে সব গাছে প্রচুর পরিমাণ আম ধরেছে। উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বারে আমের উৎপাদন প্রায় দু’লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিকটন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দফতরের উপঅধিকর্তা প্রভাস মণ্ডলের দাবি, ‘‘আম চাষের ক্ষেত্রে এক বছর ‘অন ইয়ার’ তো পরের বার ‘অফ ইয়ার’ হয়। গত বছর ‘অফ ইয়ার’-এর কারণে জেলায় আমের উৎপাদন কম হয়েছিল। এ বারে ‘অন ইয়ার’।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, মালদহ, বীরভূম, নদিয়া সহ রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় আমের উৎপাদন বেশি হয়েছে। যার জেরে ভিন্ রাজ্যে বা ভিন্ জেলায় এ জেলার আমের অন্য বার যে চাহিদা থাকে, তাও কমেছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে আম বেশি। ফলে দামও কমেছে।’’

চাষিরা জানাচ্ছেন, আম রাখার জন্য জেলায় কোনও হিমঘর নেই। আবার আম থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের ব্যবস্থাও নেই। অথচ বাগানে বাগানে আম পাকতে শুরু করেছে। আম পাকতে শুরু করলে তা বাগানে রাখা যাবে না। ফলে জলের দরে সেই আম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। জিয়াগঞ্জের আম চাষি বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘এ বারে গাছে আম ধরার পরিমাণ বেশি। তাতে আমের দাম কমে গিয়েছে।’’ লালগোলার আম চাষি মইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ বারে প্রচুর পরিমাণ আম ধরেছে। ফলে কাঁচা আম ১১-১২ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।’’ লালগোলার আর এক চাষি রফিকুল শেখ বলেন, ‘‘আমাদের ১৫ বিঘা আমের বাগান রয়েছে। এ বারে আমের বাগান বিক্রি হয়নি। তাই বাজারে আম নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবুও দাম নেই। ফলে আম চাষের খরচই এ বারে উঠবে না।’’ মুর্শিদাবাদের পাইকারি আমের ব্যবসায়ী মানিক দেবনাথের কথায়, ‘‘প্রচুর পরিমাণ আম ধরেছে। সেই সঙ্গে অত্যধিক গরম আবহাওয়ার কারণে এক সঙ্গে বাগান জুড়ে আম পাকতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে আমের দাম কমে গিয়েছে।’’

অতীতে এক সময় জেলায় শতাধিক প্রজাতির আম গাছ ছিল। তার মধ্যে প্রায় ৫০টি প্রজাতির আমের প্রজাতির কথা কৃষকদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore Mangoes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE