Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

স্বনির্ভর গোষ্ঠী নয়, মঞ্জুষা দেবে স্কুলের পোশাক

প্রাথমিক স্কুলের পোশাকে রং ও মানের সামঞ্জস্য আনতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বদলে রাজ্য সরকারি সংস্থা ‘মঞ্জুষা’কে দায়িত্ব দিচ্ছে নদিয়া জেলা প্রশাসন। এতে মানের উন্নতিও হবে বলে কর্তারা মনে করছেন।

সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২৫
Share: Save:

প্রাথমিক স্কুলের পোশাকে রং ও মানের সামঞ্জস্য আনতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বদলে রাজ্য সরকারি সংস্থা ‘মঞ্জুষা’কে দায়িত্ব দিচ্ছে নদিয়া জেলা প্রশাসন। এতে মানের উন্নতিও হবে বলে কর্তারা মনে করছেন। শুধু তা-ই নয়, কোনও বাড়তি টাকা ছাড়াই প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য পোশাক তৈরি করার অনুরোধও জানানো হয়েছে সংস্থাটিকে। তবে যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ভাল কাজ করেছে তাদের ফের বরাত দেওয়া হবে।

মুর্শিদাবাদ অবশ্য এ বার থেকেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে পোশাক তৈরি করার দায়িত্ব দিচ্ছে। এই জেলায় এত দিন প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সরাসরি টাকা দিয়ে দেওয়া হত। এ বারই প্রথম তার বদলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে বরাত দিচ্ছে প্রশাসন।

নদিয়ায় ২৬২৪টি প্রাথমিক স্কুলে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার পড়ুয়া রয়েছে। তাদের পোশাক তৈরি করার জন্য সর্বশিক্ষা মিশন থেকে চারশো টাকা করে দেওয়া হয়। গত বছরই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, একই মান ও রঙের পোশাক দেওয়া হবে। দু’জোড়া জামা-প্যান্ট, বেল্ট ও টাই। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাদের বরাত দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজ ভাল হয়নি। রং আর গুণমানে তারতম্য হয়েছে।

নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রমাপ্রসাদ রায়ের মতে, “বেশির ভাগ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পরিকাঠামো নেই। পর্যাপ্ত দর্জি নেই। তারা অন্য কোনও সংস্থা বা ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছিল। দুই তরফই নিজের লাভ রেখেছে। তাতে পোশাকের পিছনে খরচ কমে গিয়েছে। ফলে মানও কমেছে। মঞ্জুষা কাজ করলে সেই সমস্যা হবে না।’’

ঘটনাচক্রে, শান্তিপুরের পুরপ্রধান তথা প্রাক্তন বিধায়ক, তৃণমূলের অজয় দে মঞ্জুষার চেয়ারম্যান। তিনি পোশাক তৈরির প্রস্তাবে রাজি। এর আগে একাধিক জেলায় স্কুলের বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে লোকসানে ধুঁকতে থাকা মঞ্জুষা। সংস্থাকে লাভের মুখ দেখাতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে জানিয়ে অজয়বাবু বলেন, “পড়ুয়াদের পোশাক তৈরি করা কিন্তু নিছকই একটা ব্যবসা নয়। সামাজিক দায়ও বটে। আমাদের গরিব কারিগরেরাও তো কাজ পাবেন!”

রমাপ্রসাদবাবু জানান, নানা স্কুলে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা প্রতিটি শ্রেণির জন্য একটা মাপ নির্দিষ্ট করেছেন। মঞ্জুষার প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে স্কুলে-স্কুলে গিয়ে সেই মাপ নিয়েও এসেছেন। সেই সঙ্গে একই খরচে প্রাক-প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীদের পোশাক তৈরির অনুরোধও মঞ্জুষাকে জানিয়েছেন তাঁরা। রমাপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘প্রাক-প্রাথমিক বিভাগের পোশাকের জন্য কোনও টাকা দেওয়া হয় না। বড়রা পোশাক পড়ে আসে আর কচি মুখগুলো তাকিয়ে থাকে। খুব খারাপ লাগে।।”

তবে মঞ্জুষাকে কাজ দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে হতাশ স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। ধর্মদা মৈত্রী ক্লাস্টারের কোষাধ্যক্ষ সখী বিশ্বাস যেমন বলেন, “অনেকের হয়তো পরিকাঠামো নেই। নির্দিষ্ট সময়ে এক সঙ্গে কয়েক হাজার পোশাক তৈরির মতো দর্জি পাওয়া যায় না। কিন্তু কাজ হারালে আমাদের খুব ক্ষতি হবে।” জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত জানান, যারা গত বার ভাল কাজ করেছিল, এ বারও তারা কাজ পাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

School dress Manjusha Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE