কামরুজ্জামান
বিধানসভা নির্বাচনের সকালে ডোমকলকে রক্তাক্ত করে, দিন কয়েক গা ঢাকা দিয়েছিলেন বটে তবে, মাস ঘুরতেই এলাকায় তার দাপটে কোনও ভাঁটা পড়েনি।
পুলিশ অবশ্য তাকে খুঁজে পায়নি! বরাবরই তিনি ছিলেন ‘ফেরার’। সিপিএম কর্মী তহিদুল ইসলাম খুনে অভিযুক্তদের তালিকায় প্রধান অভিযুক্ত সেই তৃণমূল নেতা কামরুজ্জুমান বুধবার গ্রেফতার করল পুলিশ।
নির্বাচনের পরে বছর ঘুরে গিয়েছে। সবাইকে অবাক করে, শাসক দলের সেই ফেরার নেতাকে এত দিন পরে হঠাৎ গ্রেফতার কেন? প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেও। দলের এক জেলা নেতা আড়ালে তাই বলছেন, ‘‘পুলিশ চাইলে খুনের পর দিনই গ্রেফতার করতে পারত কামরুকে।’’ তা হলে কি দলের ভারী নেতারা কামরুর মাথা থেকে হাত তুলে নেওয়াতেই পুলিশ তৎপর হল?
তহিদুল খুনের পরে, কখনও ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতি দখলের সকালে পুলিশের সামনে সবুজ আবীরে স্নান সেরে দু-আঙুল তুলে কামরু দেখিয়েছিলেন, ‘ভিকট্রি’! দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কামরুর দিন কয়েকের ‘নির্বাসনে’র জন্য গোপন ডেরা খুঁজতে এগিয়ে এসেছিলেন দলের তাবড় নেতারা। মাস কয়েক পরে, ডোমকল টাউন তৃণমূলের সভাপতি পদেও বহাল হয়েছিলেন অনায়াসে।
সেই কামরুজ্জুমানকে কোন ‘সাহসে’ ধরল পুলিশ? জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য বলছেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু ফেরার থাকলে কী করে ধরব!’’
ডোমকলের পুর চেয়ারম্যান সৌমিক হোসেন অবশ্য পুরনো সুরেই বলছেন, ‘‘কামরুজ্জামান দক্ষ সংগঠক, তাকে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে।’’ দলের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘মুখে এ কথা বললেও, সৌমিকও জানেন, এখন দল ক্ষমতায় এসে গিয়েছে। কামরুর প্রয়োজন ফুরিয়েছে। এই অবস্থায় দল তাকে টেনে চললে মুখ পুড়ত।’’ অন্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌমিকের ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও দলের এক নেতা কোনও দিনই ওই খুনের ঘটনা সমর্থন কেননি। মুখ্যমন্ত্রীকে বুঝিয়ে তিনিই পুলিশের হাতে কামরু-গ্রেফতারের ছাড়পত্র তুলে দিয়েছিলেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আধীর চৌধুরী এই গ্রেফতারির ব্যাপারে অবশ্য কটাক্ষের সুরে বলছেন, ‘‘এই ঘটনায় পুলিশের কোনও কৃতিত্ব নেই, তৃণমূলের কোন্দলের ফলেই কামরুকে গ্রেফতার করা হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy