কৃষ্ণনগরে জাতীয় সড়কে যানজটে আটকে পড়ল ব্রিগেডগামী বিজেপি সমর্থকদের বাস।
রবিবার ব্রিগেডে মিটিং হবে— এ কথা আগেই জানতেন জেলার মানুষ। পাশাপাশি, এ-ও জানতেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ময়দানে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা ফাঁকা করে কয়েকশো বাস শনিবার থেকেই কলকাতার উদ্দেশে চলে গিয়েছে। তবুও নানা কাজে রবিবার যাঁদের পথে নামতে হয়েছিল জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে, তাঁরা সকলেই কম-বেশি বেসরকারি বাসের অভাববোধ করেছেন এ দিন। স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের হাতে বিকল্প হিসাবে টোটো, অটো থাকলেও দূরপাল্লার যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগর— জেলার মধ্যে ব্যস্ততম দূরপাল্লার বাস রুটে রবিবার এক থেকে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে চলেছে এক-একটি বাস। করিমপুর স্থানীয় বাস মালিক সমিতির সম্পাদক গৌতম ভৌমিক বলেন, “আমাদের এখান থেকে ব্রিগেডে মোট ৮২টি বাস গিয়েছে। গড়ে প্রতিদিন নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে ১১০টি বাস চলাচল করে। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই বাসের সংখ্যা কম ছিল। স্বল্পপাল্লার যাত্রীদের অসুবিধা হয়নি। কিন্তু কৃষ্ণনগরগামী যাত্রীদের অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।”
নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, “সব মিলিয়ে রবিবার তিরিশ শতাংশ বাস জেলার বিভিন্ন রুটে চলেছে। আমরা তার মধ্যে মানুষকে যতটা সম্ভব পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সাধারণ যাত্রীদের যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসের ট্রিপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ অসুবিধা হয়নি।”
কার্যকরী সমিতির সদস্য অসীম দত্ত বলেন, “কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে গড়ে সাড়ে পাঁচশো বাস চলাচল করে। রবিবার সেই সংখ্যাটা ছিল একশো। এর মধ্যে নবদ্বীপঘাট, শান্তিপুর, মাঝদিয়া প্রভৃতি রুটে গড়ে তিরিশ শতাংশ গাড়ি চলাচল করেছে। আবার হাঁসখালি-রানাঘাট রুটে ৫২টির মধ্যে ২৯টি গাড়ি চলেছে।” অন্য দিকে, জাগুলি-কাঁচড়াপাড়া রুটে প্রতিদিন ২৪টি করে বাস চলে। রবিবার চলেছে বড় জোর ৫-৬টি বাস, বাকিরা ব্রিগেড গিয়েছে। হরিণঘাটা শহর থেকে প্রায় ৩০টি বাস ব্রিগেডে গিয়েছে বলে জানা যায়।
পলাশিপাড়া বাস মালিক সমিতির সভাপতি সাধন বিশ্বাস জানান, মোদীর ব্রিগেড থাকার কারণে এক প্রকার অঘোষিত বন্ধের মতো চেহারা নিয়েছিল বাস পরিষেবা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোথাও যাত্রীদের হয়রানির খবর পাইনি। যাত্রী সংখ্যা খুবই কম ছিল। কয়েকটি বাস চলাচল করেছে।”
রানাঘাট থেকে বিভিন্ন রুটের একশোর বেশি বাস চলাচল করে। তার মধ্যে কলকাতার ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় মাত্র ১২টি বাস গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাস মালিকদের পক্ষে মদন দাস বলেন, “এ দিন অনেকে ভয়ে বাস চালাতে চাননি। যদি রাস্তা থেকে বাস নিয়ে চলে যায়। বাস কম চললেও কোনও সমস্যা হয়নি।” চাকদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটে ৭০টির মতো বাস চলাচল করে। এ দিন গুটিকয়েক বাস চলাচল করেছে। বাস মালিকদের পক্ষে সমীর ধর বলেন, “স্ট্যান্ডে বাস দেখছি না। চাকদহ-বনগাঁ রুটের গোটা পাঁচেক বাস চলাচল করেছে।” তবে যাত্রী নিয়ে কম বাস চলাচল করায় এ দিন বাস মালিকদের অনেকে লাভের মুখ দেখেছেন, কারওর আবার শুধুই লোকসান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy