Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Netaji Subhash Chandra Bose

ঘি দিয়ে আলুসেদ্ধ ভাত খেয়েছিলেন সুভাষ

সুভাষচন্দ্র রাজবন্দি হিসাবে বহরমপুর কারাগারের ৭ নম্বর ঘরে (বর্তমান মানসিক হাসপাতাল) ছিলেন ১৯২৪ সালে। সেটা তাঁর জেলায় দ্বিতীয়বার আগমন।

 নেতাজি প্রদর্শনী। নিজস্ব চিত্র।

নেতাজি প্রদর্শনী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ জেলায় এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র বোস। ১৯১৩ সালের মে মাসে একদল ঐতিহাসিক যাঁরা ক্ষেত্র সমীক্ষা করতে ইতিহাসের শহর মুর্শিদাবাদ এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেই প্রথম তাঁর মুর্শিদাবাদে পদার্পণ। বহরমপুর থেকে হেঁটে লালবাগ গিয়েছিলেন। ছিলেন লালবাগের ছবিরুদ্দিন আহমেদের বাসায়। সেখানে তাঁর ঘি দিয়ে আলুসেদ্ধ ভাত খাওয়ার কথা তিনি লিখে গিয়েছেন তাঁর ‘ভারত পথিক’ গ্রন্থে।

সুভাষচন্দ্র রাজবন্দি হিসাবে বহরমপুর কারাগারের ৭ নম্বর ঘরে (বর্তমান মানসিক হাসপাতাল) ছিলেন ১৯২৪ সালে। সেটা তাঁর জেলায় দ্বিতীয়বার আগমন। ইতিহাসবিদরা জানান, “বন্দি সুভাষ ওই সময় দাদা শরৎচন্দ্র বসুকে চিঠি লেখেন পড়ার বই পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে।” শুধু নিজের জন্য নয় রাজবন্দিদের জন্য বইকেনা সহ নানান দাবিতে তিনি বন্দি দশায় আন্দোলনও করেছিলেন বলে জানা যায়। সেখানেই শুরু করেছিলেন টেনিস খেলা, সরস্বতী পুজো সহ নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড।

১৯৩৯ সালের ১৪ জুন তিনি কৃষ্ণনাথ কলেজে ফরোয়ার্ড ব্লক দলের প্রচার ও দলের জন্য অর্থসংগ্রহের জন্য সে কথা কলেজের শতবার্ষিকী উৎসবের স্মারক গ্রন্থে লেখা রয়েছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে জেলায় বিভিন্ন সময়ে কখনও বহরমপুর, কখনও বেলডাঙা, কখনও কান্দিতে, জেমোতে, কখনও জিয়াগঞ্জে কখনও জঙ্গিপুরে এসেছিলেন সুভাষ।

বিভিন্ন সময়ে তাঁর এই মুর্শিদাবাদে আসার তথ্য নিয়ে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী সূচনা উপলক্ষে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে। ইতিহাস পরিক্রমার সহয়তায় প্রদর্শিত হয়েছে সংবিধানের পাতায় নন্দলাল বসুর আঁকা ছবিও।

এমনকি প্রদর্শনীতে আছে মুর্শিদাবাদে সুভাষচন্দ্র সম্পর্কিত গোয়েন্দা রিপোর্ট। তথ্য দিয়ে অধ্যক্ষকে সহযোগিতা করেছেন জেলার আর এক সংগ্রাহক ও গবেষক রমাপ্রসাদ ভাস্কর। সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৎকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কৃষ্ণনাথ কলেজের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল, ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে। নেতাজির নতুন দল ফরোয়ার্ড ব্লক যাদের নিয়ে তৈরি করেছেন সেই আন্দোলনের সূত্রপাত যাদের সঙ্গে নিয়ে করেছেন তাঁরা ছিলেন কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্র, শুভানুধ্যায়ী, অধ্যাপক ইত্যাদি।” আর তাই নেতাজির মুর্শিদাবাদ পরিক্রমা রাজনৈতিক ইতিহাস স্বাধীনতা সংগ্রাম সব নিয়ে কৃষ্ণনাথ কলেজে একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে নেতাজির জন্মদিনে। রমাপ্রসাদ ভাস্কর বলেন, “ এই প্রদর্শনী কৃষ্ণনাথ কলেজে স্থায়ীভাবে হওয়ায় জেলার ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষ করে সুভাষচন্দ্রের অবদান সম্পর্কে অনেক তথ্য আগ্রহীজন জানতে পারবে এবং পুরনো ইতিহাসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে।” অধ্যক্ষ জানান, “ আগামী দিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুভাষচন্দ্র বসু সংগ্রহশালাও তৈরি করার
পরিকল্পনা আছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore Netaji Subhash Chandra Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE