শাসকদলের উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা বৈঠক স্থগিত হয়ে গেল। কালীগঞ্জের হাটগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।
বৃহস্পতিবার ওই পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তৃণমূলের সলেমান শেখের বিরুদ্ধে কংগ্রেস সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি ছিল। কংগ্রেসের সদস্যদের ছ’জন সিপিএম এবং দু’জন তৃণমূল সদস্যও ওই উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু উভয় পক্ষের ঝামেলায় জেরে অনাস্থা বৈঠক স্থগিত করে দেন কালীগঞ্জের বিডিও দেবোত্তম দত্তচৌধুরি। এ ছাড়াও ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিকেলে প্রধানের স্বামী ফরহাদ আলি কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিতে যান। অভিযোগ, সেখানে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে ধরে মারধর করে। কালীগঞ্জের বিধায়ক কংগ্রেসের হাসানুজ্জামান শেখের অভিযোগ, “বিডিওর পক্ষপাতিত্বের কারণে বৈঠক পিছিয়ে গেল।’’ যদিও কালীগঞ্জের বিডিও দেবোত্তম দত্তচৌধুরির দাবি, “আইন- শৃঙ্খলার বি়ষয়টি মাথায় রেখে অনাস্থা বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে।” কৃষ্ণনগরের মহকুমাশাসক মৈত্রেয়ী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সদস্যরা ঝামেলা পাকিয়েছিলেন। ওই পরিস্থিতিতে বৈঠক করা সম্ভব ছিল না। ফলে তা স্থগিত করা হয়।’’
ওই পঞ্চায়েতে সদস্য সংখ্যা ১৯। তৃণমূল ৯টি, সিপিএম ৬টি এবং কংগ্রেস ৪টি আসনে জেতে। কংগ্রেসের মনিফা বেগম প্রধান নির্বাচিত হন। সম্প্রতি অবশ্য কংগ্রেসের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। বছর দেড়েক আগে মনিফা বেগম তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু মাস সাতেক ধরে তৃণমূলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মনিফার মনোমালিন্য হচ্ছিল। মনিফার দাবি, ‘‘তৃণমূল সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে তলেতলে অনাস্থা আনার চেষ্টা করছিলেন।’’ ফলে কিছুদিন আগে তাঁর পুরনো দল, কংগ্রেসে ফিরে আসেন। তাঁর সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য রয়েছেন বলে তৃণমূল অনাস্থা আনতে সাহস পাচ্ছিল না।
তারপরই কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূলের দুই সদস্য উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। এ দিন ওই অনাস্থা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। দু’পক্ষের সদস্যেরা পঞ্চায়েতের সামনে জড়ো হন। ঝামেলার আঁচ পেয়ে ডিএসপি (ডিঅ্যাণ্ডটি) এসএম আজিমের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী পঞ্চায়েতের সামনে মোতায়েত করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ১৭ জন সদস্য পঞ্চায়েতে আসেন। দলের ‘বিপথগামী’ দুই সদস্যকে তৃণমূলের লোকজন হুইপে সই করার জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকেন। ওই দুই সদস্যও সই করবেন না, বলে অনড় থাকেন। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। তারপরই বিডিও বৈঠক স্থগিত করে দেন।
কালীগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলের নাসিরুদ্দিন আহমেদ অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের দুই সদস্যকে অনাস্থার বিপক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য হুইপ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা মানেননি। তারপর ঝামেলার জেরে সভা স্থগিত হয়ে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy