দুর্ঘটনা রুখতে বছর তিনেক আগে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইক আরোহীদের মাথায় হেলমেট পরাতে এক দিকে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ এর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল, অন্য দিকে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন মমতা। আর তা কার্যকরী করার দায়িত্ব পড়েছিল পুলিশ-প্রশাসনের উপর। সাধারণ মানুষ দূরে থাক, যাঁদের উপর নজরদারির দায়িত্ব ছিল, সেই পুলিশকর্মীদের কারও কারও মাথায় এখনও হেলমেট ওঠে না। ফলে সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশকর্মীদের অনেকেই হেলমেট ছাড়াই বাইক নিয়ে ছুটছেন। দুর্ঘটনাও ঘটছে। যদিও জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের দাবি, ‘‘লাগাতার সচেতনতার কারণে বিগত বছরগুলির তুলনায় জেলায় দুর্ঘটনা কমেছে। এক দিকে লোকজনকে সচেতন করা হচ্ছে, অন্য দিকে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। বাইক চালক ও আরোহীদের হেলমেট পরার প্রবণতা বেড়েছে।’’
২০১৬ সালের ৮ জুলাই রাজ্য জুড়ে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। রাজ্য জুড়ে সেই প্রকল্পে বেশ সাড়াও পড়েছিল। বাসিন্দাদের সচেতন করতে বহরমপুরে হেলমেটের আদলে কালীপুজোর মণ্ডপ তৈরি করতে দেখা গিয়েছে। পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফের প্রচার করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও হেলমেটহীন চালকের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘গত বছর শুধুমাত্র হেলমেট না পরার জন্য জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার মোটরবাইক আরোহীর কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। এ বছরও জরিমানা আদায় চলছে।’’ তবে হেলমেটবিহীন মোটরবাইক আরোহীকে ধরতে গিয়ে পুলিশকে কম ঝক্কি পোহাতে হয়না। মাস ছয়েক আগের ঘটনা। রঘুনাথগঞ্জে অভিযান চলাকালীন পুলিশ হেলমেটবিহীন এক বাইক আরোহীকে আটকাতেই তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ‘‘আমি চেয়ারম্যানের পাড়ার লোক। আমাকে ছেড়ে দিন।’’ এ রকম কেউ ট্রাফিক পুলিশকে নেতা-মন্ত্রী দেখান, কেউ বা প্রশাসনের কর্তাদের কথা বলে রেহাই পেতে চান। তবে পুলিশ সুপারের কড়া নির্দেশ, ‘‘নিয়ম ভাঙলেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনও বাছ-বিচার চলবে না।’’