Advertisement
২১ মে ২০২৪

ফলন বাড়তি, সস্তা পেঁয়াজ

সহায়ক মূল্যে আলু কিনে ‌অতিফলনের ধাক্কা সামাল দেওয়ার রাস্তা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ দিকে অতিফলনের জেরে এখন পেঁয়াজের দর হুহু করে নামছে। পেঁয়াজের সম্বচ্ছরের জোগানের জন্য রাজ্য এখনও নাসিকের উপরে নির্ভরশীল।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়া ও সামসুদ্দিন বিশ্বাস
নওদা ও কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

সহায়ক মূল্যে আলু কিনে ‌অতিফলনের ধাক্কা সামাল দেওয়ার রাস্তা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ দিকে অতিফলনের জেরে এখন পেঁয়াজের দর হুহু করে নামছে।

পেঁয়াজের সম্বচ্ছরের জোগানের জন্য রাজ্য এখনও নাসিকের উপরে নির্ভরশীল। তবে মুর্শিদাবাদের নওদা থেকে শুরু করে নদিয়ার করিমপুর, তেহট্ট, চাপড়া, কৃষ্ণনগর, কৃষ্ণগঞ্জ, ধবুলিয়া, নাকাশিপাড়া, কালীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় পেঁয়াজ চাষ হয়। কিন্তু আলুর মতো পেঁয়াজের হিমঘর নেই। ফলে অতিফলন মানেই চাষির মাথায় হাত।

নওদায় গত সাত দিনে পেঁয়াজের পাইকারি দাম কেজিতে দু’টাকা কমে গিয়েছে। এমনিতেই গত শনিবার বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। ফসল তোলার মুখে পেঁয়াজের গায়ে জল-কাদা লেগেছে। তা বিক্রি হচ্ছে কম দামে। গত ২৩ মার্চ পেঁয়াজ সাড়ে ৬ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে। তা শুক্রবার নেমেছে সাড়ে ৪ টাকায়।

নদিয়াতেও পেঁয়াজের পাইকারি দর ঘোরাফেরা করছে চার থেকে পাঁচ টাকার মধ্যে। তাতেও যথেষ্ট খদ্দের পাওয়া যাচ্ছে না। এ দিকে পাট চাষের সময় এসে গিয়েছে। ছোট চাষিরা তার খরচ জোগাড় করার জন্য কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের দাবি, ৮-১০ টাকা কেজি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারলে কিছুটা লাভ থাকত।

নওদার ৮০ শতাংশ জমিতেই পেঁয়াজ চাষ হয়। স্থানীয় চাষি নাসির শেখ বলেন, ‘‘এক বিঘায় চাষ করতে খরচ ১৫ হাজার টাকা। পেঁয়াজ বেচে ১২ হাজার টাকাও উঠছে না।’’ আর এক চাষি সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘চড়া সূদ ধার নেওয়া টাকা ফেরাতে পারছে না অনেকেই।’’ ধুবুলিয়ার বনগ্রামের চাষি বাসুদেব সরকারের আক্ষেপ, “গত বছর ফলন কম হয়েছিল। তার উপরে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছিল। এ বার ভাল ফলন হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতির মুখে পড়েছি।”

নওদার বিধায়ক আবু তাহের খান বলেন, ‘‘পেঁয়াজ চাষিরা বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আমি গত সপ্তাহেই বিধানসভায় পেঁয়াজ সংরক্ষণাগারের দাবি জানিয়েছি।’’ জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক গৌতম রায়ও বলেন, ‘‘আলুর মতো পেঁয়াজও রাখা গেলে চাষিরা কিছুটা স্বস্তি পেতেন।’’

নদিয়া জেলা পরিষদের কৃষি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ কমলেশ বিশ্বাস বলেন, “পেঁয়াজ চাষিদের কী ভাবে সাহায্য করা যেতে পারে, জেলা পরিষদের পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হবে।” সবই যে কথার কথা, পেঁয়াজ চাষিরা তা স্পষ্টই বুঝতে পারছেন। যা বুঝতে পারছেন না তা হল, কী ভাবে লোকসানের ধাক্কা সামাল দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Onion prices excess production Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE