Advertisement
০৪ মে ২০২৪

রোগী-মৃত্যু ঘিরে ফের উত্তেজনা মেডিক্যালে

ফের রোগী মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। সোমবার দুপুরে সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হল পুলিশকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৬
Share: Save:

ফের রোগী মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। সোমবার দুপুরে সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হল পুলিশকে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ৬ মার্চ অ্যাপেন্ডিক্স অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হন মুর্শিদাবাদের হাঁড়িভাঙার বাসিন্দা পিন্টু ঘোষ (২২)। ৮ মার্চ রাতে অস্ত্রোপচার চলাকালীন ওই যুবক হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং কোমায় চলে যান। তাঁকে রাখা হয় আইসিসিইউ বিভাগে। সোমবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে এসে বিষয়টি জানার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পিন্টুর আত্মীয়, পাড়া-পড়শি সকলেই। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। খবর পেয়ে ছুটে আসে বহরমপুর থানার পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বহরমপুর)অনীশ সরকার মৃতের পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। পিন্টুর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মর্গে।

বহরমপুরের আইসি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে পিন্টুর পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আজ, মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পরে দেহ পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

দিন কয়েক আগে এক কিশোরের মৃত্যু ঘিরেও হইচই হয়েছিল হাসপাতালে। সম্প্রতি আয়াদের চাহিদা মতো বখশিস না দিতে পারায় সদ্যোজাতকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ দিন ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ।

পিন্টুর দিদিমা সান্ত্বনা ঘোষের অভিযোগ, ‘‘সেই ভর্তির দিন থেকে আমি নাতির সঙ্গে হাসপাতালেই পড়ে রয়েছি। ৮ মার্চ রাত ন’টা নাগাদ ওকে যখন অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হল তখনও পর্যন্ত ছেলেটা সুস্থ ছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচার চলাকালীন কি এমন হল যে, নাতি হৃদরোগে আক্রান্ত হল!’’

পিন্টুর পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য পিন্টুকে যে আইসিসিইউ বিভাগে রাখা হয়েছে সে কথাও বাড়ির লোকজনকে জানাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পিন্টুর মা চন্দনা মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘রবিবার রাতেই তো ছেলেকে দেখে গেলাম। নার্স বলল, ছেলে ভাল আছে। রক্ত দেওয়া হয়েছে। হার্টও চলছে।’’

এ দিন দুপুরে পরিবারের লোকজনকে ডেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পিন্টুর মৃত্যুর কথা জানায়। তারপর বাড়ির লোকজনের হাতে জোর করে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ ধরানোর চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পিন্টুর আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-পড়শিরা। তাঁদের প্রশ্ন, মৃত্যুর পরেও কী ভাবে হৃদযন্ত্র চলতে পারে?

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুকান্ত মণ্ডল বলছেন, ‘‘ভেন্টিলেশনে ওষুধ ও ইঞ্জেকশন দিয়ে স্থায়ী ভাবে হৃদযন্ত্র সচল করানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু সাড়া মেলেনি। মৃতের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Medical College Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE