Advertisement
E-Paper

দলিলহীন জমিতে চিন্তায় ঘুম আসে না

জেলায় প্রশাসনিক সভা করতে‌ এসে রাজ্যের জমিতে থাকা ১৫টি উদ্বাস্তু কলোনিকে দ্রুত অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেমন হাল কলোনিগুলির? কারা থাকেন সেখানে? কী বলছেন তাঁরা? খোঁজ নিচ্ছে আনন্দবাজার।কলোনির বাসিন্দা গোপাল বৈদ্য জানাচ্ছেন, ও পার বাংলা থেকে অনেকেই এখানে শূন্য হাতে চলে এসে জঙ্গল কেটে ঘর-বাড়ি তৈরি করেন। কিন্তু ‘বোনাফায়েড রিফিউজি’ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কোনও সুবিধা পাননি।

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:১০
উদ্বাস্তু কলোনি। সুভষ নগর সগুনা। ছবি: প্রণব দেবনাথ

উদ্বাস্তু কলোনি। সুভষ নগর সগুনা। ছবি: প্রণব দেবনাথ

বহু দশক আগে সগুনাতে তৈরি হয়েছিল সুভাষনগর কলোনি। প্রায় শ’খানেক ঘর তৈরি হয়েছে সেখানে। কিন্তু সেখানে বসবাস করা উদ্বাস্তু মানুষেরা আজও জমির অধিকার পাননি। ইতিমধ্যে কলোনির মধ্যে পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে। অনেকেই জমিতে পাকাপোক্ত দোতলা বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু সেই জমির তো কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই। অর্থাৎ, কাগজহীন জমির উপরে তৈরি হয়েছে বাড়ি। তাই অনেকেরই রাতে চিন্তায় ঘুম হয় না। এ বার সরকার জেলায় যে ১৫টি কলোনিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে তার মধ্যে এই কলোনিরও নাম রয়েছে। আশা-নিরাশার দোলাচলে দুলছেন বাসিন্দারা।

কলোনির বাসিন্দা গোপাল বৈদ্য জানাচ্ছেন, ও পার বাংলা থেকে অনেকেই এখানে শূন্য হাতে চলে এসে জঙ্গল কেটে ঘর-বাড়ি তৈরি করেন। কিন্তু ‘বোনাফায়েড রিফিউজি’ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কোনও সুবিধা পাননি। এ বার হয়ত সেই যন্ত্রণার অবসান ঘটতে চলেছে। কলোনির এক বাসিন্দা গোপাল বৈদ্য বলেন, ‘‘এ বার তো মুখ্যমন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন। আশা করি এ বার সমস্যা মিটবে।’’ গয়েশপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের মরণকুমার দে-র কথায়, ‘‘কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল যখন নাগরিকপঞ্জীর নামে দেশের নাগরিকদের একাংশকে তাড়াতে চাইছে, তখন এ রাজ্যের সরকার তাঁদের স্বীকৃতি দিচ্ছে।’’

বাম আমলে গয়েশপুরে বেশ কিছু কলোনি তৈরি হয়। এই পুর এলাকার চারটি কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছে উদ্বাস্তু পুর্নবাসন দফতর। কিছু দিন আগে ওই সব কলোনিগুলির সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে দফতর। আর সেই রিপোর্ট অনুযায়ী কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কলোনি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার অর্থ হল, জমির দলিল পাবেন কলোনিবাসী। খুশির জোয়ার কলোনিগুলিতে।

বেশ কয়েক দশক আগে পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে গড়ে ওঠে গোপালন নগর। ওই কলোনি তৈরি করে দেন দাপুটে সিপিএম নেতা মানিক মুখোপাধ্যায়। সেখানে ধীরে ধীরে অনেক বোনাফায়েড উদ্বাস্তু পরিবারের লোকজন বাস করতে শুরু করেন। ওই কলোনির এক বাসিন্দা প্রবীর বিশ্বাস জানাচ্ছেন, প্রায় কুড়ি বিঘে জমির উপর শচারেক পরিবার এখানে বাস করেন। আর অনেক লোকেরই বোনাফায়েড রিফিউজি সংশাপত্র রয়েছে। কিন্তু তাঁরা এত বছর পরও এখনও জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত।

তবে, অনেক দিনের অভিযোগ, ওই সব কলোনিতে অনেকেই রয়েছেন যাঁরা আদতে বোনাফায়েড রিফিউজি নন। কলোনিগুলি স্বীকৃতি পাওয়ার পরে তাঁরা জমির অধিকার পাবেন কিনা সেই প্রশ্ন থাকছে। গয়েশপুর পুরসভার কাউন্সিলর মানিক পালের বক্তব্য, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বোনাফায়েড রিফিউজি এক বার সরকারের কাছ থেকে জমি পাচ্ছেন, তার পর কলোনি স্বীকৃতি পাওয়ার পর আরও এক বার সরকারের থেকে জমি নিচ্ছেন। জমির দলিল দেওয়ার সময় এটাও খেয়াল রাখতে হবে।’’

Land Unauthorised
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy