মারা গেলেন অজ্ঞাতবাসের কবি অরুণ বসু। দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগছিলেন ফুসফুসের ক্যান্সারে। সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল পঁচাত্তর বছর। নবদ্বীপের আদি বাসিন্দা অরুণবাবু। স্কুলে পড়ার সময়ে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় স্কুল থেকে বিতাড়িত হন। সেই সময়ে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘পালাবদল’ পত্রিকা। পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় লিখেছিলেন সৈয়দ মুজতবা সিরাজ। খাদ্য আন্দোলনে সামিল হয়ে জেলে গেলে পালাবদল বন্ধ হয়ে যায়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ‘আমার দশক’ বলে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেন। এর কিছু দিনের মধ্যেই নবদ্বীপ থেকে প্রকাশিত হতে শুরু করে ‘অজ্ঞাতবাস’। কয়েকটি সংখ্যা প্রকাশিত হতেই অজ্ঞাতবাস সাড়া ফেলে দেয়। কৃত্তিবাস পরবর্তী বাংলা কবিতার জগতে অজ্ঞাতবাস-এর নাম মুখে মুখে ফিরত। জয় গোস্বামী, দেবদাস আচার্য, মৃদুল দাশগুপ্ত প্রমুখ ছিলেন অজ্ঞাতবাসের নিয়মিত লেখক। পরবর্তীকালে অরুণ বসু কলকাতায় চলে গেলে অনিয়মিত হয়ে পড়ে অজ্ঞাতবাস। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অরুণ বসু ‘হ্যাংরি জেনারেশন’ আন্দোলনের প্রভাবে এই সময় নিজের যাবতীয় লেখার পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলেন। লেখালেখির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে সত্যি সত্যিই অজ্ঞাতবাসে চলে গিয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুকাল এ ভাবেই কাটে। এই সময়ে তাঁর প্রবল অনিচ্ছা স্বত্তেও বন্ধু আশুতোষ চক্রবর্তীর চেষ্টায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘অনুশাসন ব্যতীত আজ’। সেটা ১৯৭৯ সাল। মাত্র ৪৫টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। বছর কয়েক পর ১৯৮২-১৯৮৩ সাল নাগাদ অরুণবাবু অজ্ঞাতবাস ভেঙে বেরিয়ে আসেন। শুরু হয় নতুন করে লেখালেখি। কলকাতা থেকে ফের প্রকাশিত হতে শুরু করে অজ্ঞাতবাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy