Advertisement
E-Paper

বিগ্রহ চুরির ঘটনায় গ্রেফতার সেবাইত

নবদ্বীপের শ্যামসুন্দর জিউ আখড়ার বিগ্রহ চুরির ঘটনায় মূল সেবাইত-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে আখড়ার সেবাইত মুকুন্দ দাস ও তাঁর ভাই নরেশ প্রামাণিককে পুলিশ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। শুক্রবার ধৃত ওই দু’জনকে নবদ্বীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩৬

নবদ্বীপের শ্যামসুন্দর জিউ আখড়ার বিগ্রহ চুরির ঘটনায় মূল সেবাইত-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে আখড়ার সেবাইত মুকুন্দ দাস ও তাঁর ভাই নরেশ প্রামাণিককে পুলিশ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। শুক্রবার ধৃত ওই দু’জনকে নবদ্বীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। নবদ্বীপ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নবেন্দু মণ্ডল জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। নবদ্বীপের আইসি তপনকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘ওই আখড়ায় চুরির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।’’

গত মঙ্গলবার নবদ্বীপের জনবহুল বনচারী বাগানের কদমতলার শ্যামসুন্দর জিউর আখড়া থেকে বহু প্রাচীন শ্যামসুন্দর জিউয়ের বিগ্রহ চুরি হয়। সেই মূর্তির সঙ্গে সঙ্গে উধাও হয়ে যায় বৈষ্ণব ভক্ত বলে পরিচয় দিয়ে ওই আখড়ায় আসা শ্যাম দাস নামে এক যুবক। সে নিজেকে মেদিনীপুরের বাসিন্দা বলে জানিয়েছিল। কী ভাবে একজনের পরিচয় যাচাই না করেই এ ভাবে আখড়ায় থাকতে দেওয়া হল তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু কোনও সদুত্তর মেলেনি ধৃত সেবাইতের কাছ থেকে। অথচ আখড়ার প্রধান সেবাইত মুকুন্দ জানিয়েছেন তিন-চার দিন আগে ওই যুবক শ্রীবাসঅঙ্গন রোডের কৃষ্ণ-বলরাম মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মুকুন্দ নিজে ওই যুবককে শ্যাম বলে ডাকতেন। প্রসঙ্গত, বনচারী বাগান থেকে কিছু দূরে শ্রীবাসঅঙ্গন রোডে কৃষ্ণ বলরাম মন্দিরটি মুকুন্দ দাসের বলেই পুলিশ জানতে পেরেছে। তিনি আলাদা ভাবে ওই মন্দিরটি গড়ে তুলেছেন। সেখানে তিন দিন থাকার পরে ওই যুবক মঙ্গলবার সকালে শ্যামসুন্দর আখড়ার এসেছিল। আর সেদিন দুপুরেই চুরি যায় কৃষ্ণ বিগ্রহ।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, তদন্তে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব এখনও মেলেনি। যেমন, তিন দিন ধরে তাঁর নিজের কৃষ্ণ বলরাম মন্দিরে আশ্রয় দেওয়ার পরেও কেন মুকুন্দ দাস বলছেন শ্যামদাসকে তিনি বিশেষ চেনেন না বা তাঁর পরিচয় জানেন না? মুকুন্দ দাসের কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে কেন তিনি কোনও কিছু না জেনে একজন অজ্ঞাতকুলশীলকে তিন দিন ধরে আশ্রয় দিলেন? সেই সময়ে কেন তিনি ওই যুবক সম্পর্কে কোনও খোঁজখবর নিলেন না। তিন দিনের মাথায় ওই যুবক নবদ্বীপের আর কোনও মঠ-মন্দিরে না গিয়ে মুকুন্দ দাসের তত্ত্বাবধানে থাকা শ্যামসুন্দর আখড়াতেই কেন গেল? ওই আধিকারিক জানান, ধৃত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা চলছে।

বছর তিনেক পরে নবদ্বীপে ফের বিগ্রহ চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন মঠ-মন্দির কর্তৃপক্ষ। নবদ্বীপের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে ছোটবড় দেড় শতাধিক মঠ-মন্দির। এই সব মঠ-মন্দিরে রয়েছে বহু প্রাচীন বিগ্রহ, পুঁথি, গ্রন্থ বা অন্য কোনও বহুমূল্য দ্রব্য। গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের সভাপতি অদ্বৈত দাস বাবাজি বলেন, ‘‘মঠ-মন্দির এখন দুষ্কৃতীদের সবথেকে পছন্দের লক্ষ্য। মঠের সম্পত্তি, বিগ্রহ, অলঙ্কার সব কিছুতেই তাদের নজর।’’ তিনি জানান, ফের চুরি হওয়ায় সকলেই খুব উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

Mukanad Das Nabadwip Naresh Pramanik Police Santipur Tapan kumar misra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy