শুরু হয়ে গেল ফিফা অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ।
ঘরের মাটিতে এই বিশ্বকাপের উন্মাদনার সুযোগে ফুটবলকে আরও জনপ্রিয় করতে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাবে ফুটবল দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বারে পুলিশের মাধ্যমে জেলায় জেলায় ফুটবল বিলির নির্দেশ দেওয়া হল।
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের এডিজি সব জেলায় পুলিশ সুপারদের কাছে এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। সেই মতো ফুটবল বিলির প্রস্তুতি পর্ব প্রায় শেষও করে ফেলেছে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। ৯ অক্টোবর, সোমবার বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবের প্রতিনিধিদের হাতে ফুটবল তুলে দেওয়া হবে। ৯ ও ১০ অক্টোবর নদিয়ার থানাগুলি থেকেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ক্লাবগুলিকে ফুটবল দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে। এই সময়ে ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তুলতে ফুটবল বিলি করা হচ্ছে। শনিবার জেলাসদর থেকে বিশ্বকাপ ফুটবলের রেপ্লিকা নিয়ে একটি ট্যাবলোও রওনা দেবে। সেটি জেলা জুড়ে ঘুরবে।” রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর থাকা সত্ত্বেও পুলিশকে দিয়ে ফুটবল বিলি করানো হচ্ছে কেন? তার ব্যাখ্যায় না গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “এটাই সরকারি নির্দেশ।”
নদিয়ার জেলাসদর কৃষ্ণনগর থেকেও আজ, শনিবার ট্যাবলো রওনা করাচ্ছে জেলা পুলিশ। নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবগুলির তালিকা দিয়েছে। সেই মতো ৯ ও ১০ অক্টোবর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবকে ফুটবল দেওয়া হবে।”
বিশ্বকাপের আগে ফুটবলের উন্মাদনা তুঙ্গে তুলতে কয়েক মাস আগে থেকেই ফিফা লোকাল কমিটি ও ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রকের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে ‘মিশন ১১ মিলিয়ন’। যার লক্ষ্য, দেশের এক কোটি ১০ লক্ষ পড়ুয়াকে ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট করা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষা দফতর ও ফিফা লোকাল কমিটিক প্রতিনিধিরা গিয়ে সেমিনার করেছেন। অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে দেশ জুড়ে ফুটবল-জ্বরও বইতে শুরু করেছে।
শুক্রবার বিকেলে নয়াদিল্লিতে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলের সূচনার পরে এই উন্মাদনা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন কর্তারা। কলকাতায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হবে ১০টি ম্যাচ। তার মধ্যে একটি ফাইনাল। ফলে তার প্রস্তুতি ঘিরে কলকাতা তথা সারা রাজ্যে ইতিমধ্যে সাজো-সাজো রব। এই উন্মাদনাটাই কাজে লাগিয়ে দিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন।
রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি সরকারি ও সরকার-পোষিত উচ্চ বিদ্যালয়, হাইমাদ্রাসা ও ক্লাবকে পাঁচটি করে ফুটবল দেওয়া হবে। যে ক্লাবগুলি ২০১১ সাল থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়ে আসছে, তাদের ফুটবল দেওয়া হবে। এ ছাড়া রাজ্যের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫টি করে, প্রতিটি পুলিশ লাইন এবং রাজ্য পুলিশের প্রতিটি ব্যাটালিয়ানেও ১০টি করে ফুটবল দেওয়া হবে। রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা পুলিশ সুপারদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। আয়োজক দেশ হিসেবে প্রথম দিনেই আমেরিকার সঙ্গে খেলা হয়েছে ভারতীয় দলের। বিশ্বকাপ জয়ের খোয়াব হয়তো কেউই দেখছেন না। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের দেশে ফুটবলের গৌরব যদি ফেরানো যায়, ক্ষতি কী?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy