জনশূন্য: নতুন জেটি ফাঁকা। বাঁশের মাচাতেই যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র
নদীর বুকে ভাসছে নতুন জেটি। ঝলমলে আলো, চার দিক রেলিংয়ে ঘেরা, ওঠানামার শক্তপোক্ত পথ। এক কথায় ফেরি চলাচলের জন্য একটা জেটিতে যা যা প্রয়োজন সে সবই আছে নতুন ওই জেটিতে। কেবল যাত্রী ওঠানামার ব্যস্ততাটুকুই নেই।
কিছু দিন আগেই দোলের সময়ে ঘটা করে উদ্বোধন করা হয়েছিল নবদ্বীপ বড়ালঘাটের গঙ্গায় ভাসমান ওই জেটির। সে সময় নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ সমিতির তরফে জানানো হয়েছিল, নতুন জেটি দিয়ে নবদ্বীপ ও স্বরূপগঞ্জের মধ্যে ফেরি চলাচল করবে। নবদ্বীপের দু’টি ফেরিঘাটে দু’টি ভাসমান জেটির দাবি বহু দিনের। সেই দাবি পূরণ হওয়ায় সকলেই ভেবেছিলেন, নবদ্বীপের ঘাটে বাঁশের মাচার দিন বোধহয় শেষ হল। কিন্তু উদ্বোধনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত যাত্রী পারাপারে দ্বিতীয় জেটির ব্যবহার শুরুই হয়নি। নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জ রুটে সেই আগের মতোই বাঁশের অস্থায়ী জেটি দিয়ে ওঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। গঙ্গায় জলের পরিমাণের সঙ্গে সেই জেটির উচ্চতা বাড়ে কমে।
কিন্তু উদ্বোধনের পরেও কেন চালু হল না নতুন জেটি? নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির সম্পাদক অলোক মণ্ডল বলছেন, ‘‘নতুন ওই জেটির সব কাজ এখনও শেষ হয়নি। তা ছাড়া বড়ালঘাটের দিকে যেখান দিয়ে যাত্রীরা জেটিতে প্রবেশ করবেন বা বেরিয়ে আসবেন সেখানকার জায়গা খুব কম। যে কারণে টিকিট কাউন্টার করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাই এই বিলম্ব।”
পুরানো জেটির টিকিট কাউন্টার থেকে নতুন এই জেটি অনেকটাই দূরে। তা ছাড়া দ্বিতীয় জেটি যেখানে বড়ালঘাটের মূল মাটি ছুঁয়েছে সেখানে রাস্তা এতই সংকীর্ণ যে জেটির থেকে নামা যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করার জায়গা পর্যন্ত নেই।
শুধু তা-ই নয়, গরমের শুখা মরসুমে নদীতে জল অনেক কম। ফলে ভাসমান জেটি এখন বেশ নীচে। ফেরি থেকে নেমে জেটি হয়ে মূল রাস্তায় আসা মানে, খাড়াই বেয়ে প্রায় দোতলা বাড়ি সমান উঁচু রাস্তায় ওঠা। বয়স্কদের জন্য যা বেশ কষ্টসাধ্য।
নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “জেটিতে ওঠানামার ঠিক মুখেই একটি ছোট বাড়ি আছে। যার জন্য জেটি ব্যবহারে অসুবিধা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে জেটি চালু করতে। ”
নবদ্বীপ ঘাটের দু’টি জেটি থেকে নবদ্বীপ-মায়াপুর এবং নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জ রুটে নৌকা চলাচল করে। অন্য দিকে মায়াপুরের হুলোরঘাট থেকে জলঙ্গি নদীপথে মায়াপুর-স্বরূপগঞ্জ রুটে নৌকা চলাচল করে। পর্যটক ছাড়াও প্রতি দিন হাজার হাজার নিত্যযাত্রী নবদ্বীপের দু’টি ঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। অগত্যা নতুন জেটি পেয়েও দ্বিতীয় রুটের যাত্রীদের ভরসা বাঁশের মাচাই। আর প্রশাসনের আশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy