Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টি পড়লে গায়েঁর রাস্তা পাঁকাল পুকুর

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বড়ঞা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সঞ্জু মাঝি। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কৌশিক সাহা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বড়ঞা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সঞ্জু মাঝি। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কৌশিক সাহা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

আবর্জনা জমে মজে আসছে ডোবা। নিমা গ্রামে।নিজস্ব চিত্র

আবর্জনা জমে মজে আসছে ডোবা। নিমা গ্রামে।নিজস্ব চিত্র

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

• আমাদের পঞ্চায়েতের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়ক। খুব ব্যস্ত সড়ক। কিন্তু কোনও সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। ফলে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কোনও সিগন্যালের ব্যবস্থা করা যায় না?

রাজু শেখ, নিমা

সত্যিই ওই মোড়টি অত্যন্ত বিপজ্জনক মোড়। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওই মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যাল করার মতো সেই অর্থ পঞ্চায়েতের নেই। তবে আমরা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের আর্জি জানিয়েছি, যাতে ওই মোড়ে একটি ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা করা যায় তার জন্য।

•টাকা বাতিলের জেরে এলাকার বহু চাষি কম দামে ধান বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু এখন সরকারি সহায়ক মূল্যে সরকার ধান কিনতে শুরু করলেও পঞ্চায়েত থেকে এলাকার চাষিদের মাত্র কুড়িটি কুপন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এলাকায় চাষির সংখ্যা আছে কয়েক হাজার। ফলে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সকলকে কুপন দেওয়া হচ্ছে না কেন? এ ব্যাপারে আপনারা কী কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন?

নির্মল ঘোষ, নিমা

এই সমস্যা নিয়ে আমরাও ভুক্তভোগী। সমস্যার কথা বিডিও ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। যাতে কুপনের সংখ্যা বাড়িয়ে সকল চাষির কাছ থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে পারা যায়। সেই চেষ্টা আমরা করছি।

•‘মিশন নির্মল বাংলা’র মাধ্যমে এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেখানে ৩২০০ টাকা দিতে হবে বাসিন্দাদের আর সরকার দেবে দশ হাজার টাকা। কিন্তু বহু পরিবার আছে যাদের ওই ৩২০০ টাকা সরকারকে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ফলে তারা কী ওই শৌচাগার থেকে বঞ্চিত হবে?

দীপঙ্কর পাল, গ্রামশালিকা

ওই ধরনের সমস্যা একেবারেই আসছে না এমন নয়। তবে তাদের জন্য যৌথ্য শৌচাগার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবং ওই সিদ্ধান্তের কথা বিডিওকে জানিয়েওছি। সেক্ষেত্রে জায়গা পাওয়া গেলেই ওই শৌচাগার নির্মাণ করা যাবে।

•আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায় রাস্তার পাশে থাকা পুকুর বা জলাশয়গুলির সুরক্ষিত দেওয়াল না থাকায় রাস্তা ভেঙে পুকুর হয়ে গিয়েছে। রাস্তা ছোট হয়ে গিয়েছে। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে সাইকেল বা মোটরবাইক ছাড়া আর কোনও যানবাহন যাতায়ত করতে পারে না।

খাইরুল আলম, পালি

পুকুর পাড়ে সুরক্ষিত দেওয়াল না থাকায় রাস্তা ভাঙে যাচ্ছে। তাই পঞ্চায়েত থেকে উদ্যোগ নিয়ে একশো দিনের কাজের মাধ্যমে ওই পুকুরের পাড়গুলি সংস্কার করে রাস্তাগুলি চওড়া করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রাস্তাগুলি ঢালাই রাস্তা করার জন্য জেলা পরিষদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।

•সরকার সহায়ক মূল্যে যেমন ধান কিনছে ঠিক একই ভাবে আলু কেনার ব্যবস্থা থাকলে চাষিদের ক্ষতির মুখে পড়তে হত না। আলুর বীজ থেকে রাসায়নিক সার চাষ করে বিঘা প্রতি প্রায় ৫ থেকে ৭হাজার টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

গ্রামশালিকায় অকেজো নলকূপ। নিজস্ব চিত্র

কার্তিক দাস, নিমা

আমরা ওই বিষয়ে কৃষি দফতরের কর্তাব্যক্তিদের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে ওই দাবি জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।

•বড়ঞা ব্লকে অন্যতম বড় বাজার ডাকবাংলা বাজার। যেটা আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে আছে। বাজারে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্লকে বাসিন্দারা ছাড়াও বহু বাইরে থেকেও বহু ব্যবসায়ী ওই বাজারে ভিড় করে। কিন্তু তারপরেও ওই বাজারে একটিও শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই।

কাজল শেখ, বাহাদুরপুর

ডাকবাংলা থেকে বাহাদুরপুর মোড় প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে ওই বাজার। জমির অভাবে ওই বাজারে শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে পারা যায়নি। কিন্তু এবার বিডিওর সহযোগিতায় জমি পাওয়া গিয়েছে। আশা করি এ বার ওই শৌচাগার নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

•এলাকায় নলকূপগুলি বিকল থাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সামনেই গ্রীষ্মকাল, ফলে তার আগে যদি ওই নলকূপগুলি মেরামতি করা না হয় তা হলে এলাকায় তীব্র জল সঙ্কট দেখা দেবে। তারই মধ্যে শুধু পারশালিকা গ্রামেই আটটি নলকূপের মধ্যে সাতটি নলকূপ বিকল।

বিশ্বজিৎ ঘোষ, পারশালিকা

পঞ্চায়েত এলাকায় বারোটি গ্রামে পঞ্চায়েতের ১৭৫টি নলকূপ আছে। কিন্তু তার মধ্যে ৬৫টি নলকূপ বিকল হওয়ায় খবর আমাদের কাছে আছে। ওই নলকূপগুলি মেরামত করার কাজ চলছে। পানীয় জলের যাতে সঙ্কট না হয় সেই দিকে পঞ্চায়েত নজর রাখছে।

•রাস্তাঘাটের উন্নতি হলেও চিকিৎসার কোনও উন্নতি হয়নি। বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা প্রায়ই হয় কান্দি হাসপাতাল বা মুর্শিবাদাবাদ মেডিক্যালে ‘রেফার’ করেন।

সৌরভ ঘোষ, রামেশ্বরপুর

প্রথমত পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মধ্যে গ্রামীণ হাসপাতাল নেই। তবুও আমরা এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাব্যক্তিদের কাছে বহুবার স্বাস্থ্যের উন্নয়নের দাবি জানিয়েছি। আবারও ওই দাবি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানাব।

•শোধনাগার না থাকায় পঞ্জাব থেকে বীজ এনে আলুর চাষ করতে হয়। ফলে খরচ বাড়ে। এলাকায় বীজ শোধনাগারের ব্যবস্থা হলে চাষিরা উপকৃত হতেন।

নবকুমার ঘোষ, পছিপাড়া

এলাকায় একটি বীজ শোধন কেন্দ্র করার জন্য জেলা কৃষি দফতর ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে আমাদের এলাকায় শীঘ্রই একটি মাটি শোধনকেন্দ্র খোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Village Well Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE