পাশ কাটিয়ে। রঘুনাথঞ্জের মিয়াঁপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
তৈরি হওয়ার পরে টেনেটুনে আট মাসও পার হয়নি। এরই মধ্যে বেরিয়ে পড়েছে সেতুর দাঁত-নখ!
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন প্রণব মুখোপাধ্যায় মিয়াঁপুরে রেলসেতু নির্মাণের কথা ঘোষণা করেন। সেতুটি তৈরিও হয়। কিন্তু আট মাসের মধ্যেই জঙ্গিপুর স্টেশন লাগোয়া মিয়াঁপুরে সেই রেলসেতু বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এখনও চার জন জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিষয়টি পূর্ব রেলের নির্মাণ বিভাগের মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিককে লিখিতভাবে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দফতরের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার একে ভৌমিক গ্রামবাসীর উত্তরে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন সেতু সংস্কারের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য সেপ্টেম্বর মাসের আগে তা সারানো সম্ভব নয়।
তত দিন?
এ দিন গিয়ে দেখা গেল উড়ালপুলের উপর প্রায় ৪০ ফুট এলাকা জুড়ে কংক্রিটের ঢালাই উঠে বেরিয়ে পড়েছে লোহার রড। প্রতিদিনই একাধিক দুর্ঘটনা ঘটছে সেখানে। মহকুমা শহর রঘুনাথগঞ্জে ঢোকার প্রধান প্রবেশ পথ এই রেল সেতুটি। অতিরিক্ত যান চলাচলের চাপ রয়েছে। কিন্তু মাত্র আট মাসের মধ্যেই সেতুর এমন দশায় উদ্বেগ বেড়েছে গাড়ি চালকদের। মিয়াঁপুরের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘আগে রেলের ফটক পেরিয়ে যাতায়াত করা যেত। সেতু চালুর পরদিনই ফটক সিল করে দিয়েছে রেল দফতর। ফলে বাইক, রিকশা, ভ্যান, এমনকি সাইকেল-সহ সমস্ত গাড়ি রেল সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করছে।’’ তাতেই বাড়ছে দুর্ভোগ।
১৩.৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩৮.৩২ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৫০ মিটার প্রস্থ এই রেলওয়ে উড়ালপুলটির শিলান্যাস করেছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছরের ২৭ নভেম্বর। সেতুর দু’দিকে দুটি সংযোগ সড়ক তৈরি করে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর। এখন রেল সেতুর উপর থেকে কংক্রিটের ঢালাই উঠে গিয়ে ৩০ ফুটেরও বেশি এলাকায় বিপজ্জনক ভাবে লোহার শিক বেরিয়ে পড়েছে। কেন এমন হল?
পূর্ত দফতরের কর্তাদের মত, দু’দিকের পিচের সংযোগ সড়কটি ঢালু হওয়ায় জল নিকাশি নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু রেল পুলের মূল অংশে জল নিকাশির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে সেখানে বৃষ্টির জল দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকছে। সেই জমা জলের চাপে রেল সেতুর উপর থেকে কংক্রিটের ঢালাই উঠে যাচ্ছে মত পূর্ত দফতরের। বেরিয়ে থাকা লোহার শিক জমা জলে ঢেকে থাকায় বাইক, রিকশার মতো ছোট ছোট গাড়ির চালকেরা তা দেখতে পাচ্ছেন না। রাতে আরও বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে সেতুটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy