প্রতীকী ছবি।
মাথার উপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ঘটনাস্থলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। আহত হয়ে সাগরদিঘি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি আরও তিন জন। সোমবার সকালে সাগরদিঘির বংশিয়া গ্রামে ওই দুর্ঘটনায় মৃত তরুণের নাম রানা ঘোষ (১৮)। তাদের সকলেরই বাড়ি স্থানীয় বালিয়া গ্রামে। রানা ছিল গ্রামের স্কুলেরই দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। পুলিশ জানায়, সাগরদিঘির চন্দনবাটি গ্রামে প্রাচীন মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালা পুরনো রেওয়াজ। এ দিনও একাধিক ট্রাক্টরে গ্রামের শিব ভক্তেরা বালিয়া যেতে শুরু করেন। তুমুল শব্দে ডিজে বক্স বাজিয়ে সেই ট্রাক্টরগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বংশিয়ার পথে।
জনা ২০ তরুণ ছিল ওই ট্রাক্টরে। তারস্বরে বাজছিল বক্স। রাস্তার ধারে বাঁশঝাড়। তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়েই ঝুঁকে পড়া বাঁশের সঙ্গে ট্রাক্টরের ডিজে বক্সের ধাক্কা লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার ফলেই হাইটেনশন তারটি ছিড়ে পড়ে। ট্রাক্টরের ধারে বসেছিল রানা, তারটি সটান এসে তার গায়ে পড়ে। ধোঁয়ায় ভরে যায় এলাকা। সঙ্গে তীব্র শব্দ। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রানা। তার পাশেই বসেছিল আরও তিন জন। আহত হন তাঁরাও।
তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে যদি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়েন, এই ভয়ে অন্যরাও এগিয়ে যেতে দ্বিধা করতে থাকেন। মিনিট পনেরো এ ভাবে কাটার পরে একে একে সকলকেই তোলা হয়। আহতদের সাগরদিঘি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ভ্যান রিকশায়। ডাক্তাররা জানান, রানার মৃত্যু হয়েছে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। আহত দু’জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। মৃতের বাবা কাঞ্চন ঘোষ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর এক মাত্র ছেলে রানা সামনের বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিত। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটার সামনেই বিয়ে। ছেলেটাকে নিয়েও স্বপ্ন দেখতান। সব শেষ।’’
বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত ভট্টাচার্য জানান, এলাকায় সমস্ত বিদ্যুতের তার ঝুলে রয়েছে। ক’দিন আগেই দুর্ঘটনায় একটি লরি কোনওক্রমে বেঁচেছে। মাস তিনেক আগে ভ্যানে করে কয়েকটি মোষ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মোষের শিংয়ে লেগে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় কয়েকটি মোষের। তিনি বলেন, “রাস্তা সংস্কারের সময় মাটি ফেলে দেড়-দু ফুট করে উঁচু করা হয়েছে রাস্তা। অন্য দিকে তার ঝুলে রয়েছে প্রায় নাগালের মধ্যেই বিদ্যুতের তার। তার জেরেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে।
সাগরদিঘির বিদ্যুৎ সরবরাহ দফতরের সহকারি ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ ভট্টাচার্যকে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy